বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়ায় গ্রেড পয়েন্ট যোগ্যতায় পূর্বের নিয়ম বহাল রাখার দাবিতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের বিএম কলেজে সমাবেশ অনুষ্ঠিত।
২৮ মে সকাল ১১ টায় বিএম কলেজ জিরো পয়েন্টে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, সরকারি ব্রজমোহন কলেজ শাখার উদ্যোগে গ্রেডপয়েন্ট যোগ্যতায় পুর্বের নিয়মে বহাল রাখা ও উচ্চশিক্ষায় আসন সংখ্যা বৃদ্ধির দাবিতে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, সরকারি ব্রজমোহন কলেজ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক হাফিজুর রহমান রাকিবের সভাপতিত্ব বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বিএম কলেজ শাখার সংগঠক বিজন সিকদার, সদস্য রেজওয়ান রেজা, মহানগর শাখার দপ্তর সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সরকারি মহিলা কলেজের সংগঠক অদিতি ইসলাম, বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ, সরকারি বরিশাল কলেজ শাখার সংগঠক সিফাত আকন প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিগত বছরগুলিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন যোগ্যতায় এই গ্রেডপয়েন্ট ছিল ২.০০। এবার ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের বিজ্ঞপ্তিতে হঠাত করেই তা বাড়িয়ে মানবিকের বিভাগের জন্য এসএসসিতে ৩.৫ ও এইচএসসিতে ৩.০ এবং বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে এসএসসিতে ও এইচএসসিতে ৩.৫ যোগ্যতা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিবছর প্রায় দশ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পার করে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সিট সংকুলান না হওয়ায় উচ্চ শিক্ষার জগতে প্রবেশের জন্য তাদের একমাত্র আশ্রয়স্থল হিসেবে সর্বাগ্রে থাকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু এই গ্রেড পয়েন্ট বৃদ্ধির মাধ্যমে আসে বিশাল অংশের শিক্ষার্থীদের জন্য সেই দ্বারকে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। আবার একদিকে উচ্চশিক্ষায় পর্যাপ্ত আসন নেই অন্যদিকে জাতীয় বাজেটের খুবই নগন্য হারে বরাদ্দ দেয়া হয় শিক্ষা খাতে। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাখাতে জাতীয় বাজেটের ২৫% দাবি থাকলেও তা প্রতিবছর ১২/১৩ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। এটা সরকারের শিক্ষা সংকোচন নীতিরই বহিঃপ্রকাশ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, উচ্চ শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য এই পদক্ষেপ এমন কথা বলা হচ্ছে। অথচ শিক্ষা ব্যবস্থায় ধনী-গরীব, গ্রাম-শহর নারী-পুরুষ বৈষম্য চালু রেখে, পর্যাপ্ত মান সম্মত শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরি না করে, বাণিজ্যিকীকরণ অব্যাহত রেখে শুধুমাত্র গ্রেড পয়েন্ট কম থাকার এর অজুহাত দেখিয়ে এতগুলো শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে। এটা কোন মান ঠিক রাখার উদ্যোগ নয়, এটি একটি ছাঁটাই প্রক্রিয়া, যা ক্রমশ আরও আগ্রাসী হবে। এছাড়াও প্রতি বছর সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের আগেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করে শিক্ষার্থীদেরকে অবর্ণনীয় ভোগান্তির মধ্যে ফেলা হয় এবং তাদের কাছ থেকে বিপুল অংশের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। এই ধরণের ভর্তি বাণিজ্য ও মুনাফালোভী পদক্ষেপ বন্ধেরও আমরা দাবি জানাচ্ছি।সমাবেশ শেষে একটি মিছিল ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।