গত তিন বছর আমি কলকাতায় আসি নি। আসলে কলকাতায় আর কেউ নেই আমার। বাবা আর মা দুজনেই মারা যাবার পর কলকাতার ওপর টানও নেই আর। তিন বছর আগে যখন ফিরছিলাম তখন ট্রেনেই পরিচয় হয়েছিল এক পরিবারের সাথে। স্বামী, স্ত্রী আর একটি মেয়ে। প্রথম দুজন মধ্যবয়স্ক আর মেয়েটির বছর কুড়ি বয়েস। থ্রি টায়ারে যাতায়াত করেন যারা তারা জানেন, বেশ কিছুক্ষন কেউ পরস্পরের সাথে কথা বলেন না। তার পর আসতে আসতে জড়তা কাটে। আমি সাধারণত কারুর সাথেই নিজে থেকে কথা বলি না। এরা দেখলাম একটু অন্যরকম।
ট্রেন চলতে শুরু করতেই কথা বলা শুরু করলেন। কি করি, কোথায় থাকি। বললাম সব। বাবা, মা নেই। কলকাতায় এসেছিলাম এমনিই। কলকাতাতেই থাকতাম। বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছিলাম। এখন থাকি কন্যাকুমারী যাওয়ার পথে এক আধা শহরে। ব্যবসা করি একটা ছোটখাট। এসব শুনেই রণে ভঙ্গ দেন অনেকেই। কিন্তু এরা দুজনই বেশ মনযোগ দিয়ে শুনছিলেন আমার কথা। মেয়েটি জানলার ধারে বসে বাইরে তাকিয়ে বসে ছিল। আমাদের কথা শুনছিল বলে মনে হচ্ছিল না আমার।
কিছুক্ষন পর কথাবার্তা বন্ধ হল স্বাভাবিক নিয়মে। আমি একটা বই বার করে পড়তে শুরু করলাম। বাইরে তখন মেঘ করেছে বেশ। তাকিয়ে দেখি মেয়েটি তখনও বাইরেই তাকিয়ে আছে। শান্ত,স্নিগ্ধ চেহারার মেয়ে। ওর মা বললেন - জানলার ধার থেকে সরে আয় মাটি। ঠাণ্ডা লেগে যাবে। মেয়েটি মুখ ফেরালো। হাসলো একটু। এই প্রথম চাইলো আমার দিকে। বড় স্নিগ্ধ সেই চাহনি। কত বয়েস হবে মেয়েটির? বছর কুড়ি বাইশ। আর তক্ষুনি আমার বড় ভাল লেগে গেল মেয়েটিকে। আমার তখন তেত্রিশ বছর বয়েস। সেই অর্থে কোন মেয়েকেই ভাল লাগেনি আমার কখনো। প্রায় বছর পনেরো আমি ইন্ডিপেন্ডেন্টলি থাকি তখনই। অনেক ঝড় ঝাপ্টা সামনে এখন থিতু হয়েছি একটু। মেয়েটি আমার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো
-- বাড়ি থেকে আজকাল কেউ পালায়? সত্যি পালিয়েছিলেন আপনি? কেন পালিয়েছিলেন?
মনে হল যেন কতদিনের চেনা। আকাশে আর মেঘ নেই। বাইরে সন্ধে নামছে ছুটন্ত কামরার মধ্যে আলো জ্বলে উঠেছে। বললাম
-- সে অনেক লম্বা গল্প।
ট্রেন চলেছে। এই দক্ষিণগামী ট্রেনগুলোয় হকার প্রায় ওঠে না বললেই চলে। ক্যাটারিং এর লোকজন খাবারের অর্ডার নিচ্ছিল। মেয়েটি বললো সে বাথরুমে যাবে। ভদ্রমহিলা ভদ্রলোককে বললেন যে একটু নিয়ে যাও না মাটিকে।
ওরা চলে গেলে উনি আমায় বললেন - বাবা, আমরা চলেছি ভেলোর। মাটি আমার মেয়ে ওর মাথায় একটা টিউমার আছে। কলকাতায় অপারেশন করাতে ভয় হল। আর অনেকে বললেন ভেলোরে নাকি অনেক কম পয়সায় খুব ভাল চিকিৎসা হয়। তাই নিয়ে যাচ্ছি।
মনটা খারাপ হয়ে গেল। এই ফুলের মত মেয়েটার ব্রেন টিউমার। আমাদের সংগে এক দক্ষিণ ভারতীয় দম্পতি ছিলেন আর দুটি সিটে। তারা নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলেন তামিলে।
মেয়েটি ফিরে এল
দেখলাম ওর বাবা ধরে নিয়ে আসছেন ওকে। বললেন -আবার অজ্ঞান হয়ে গেছিল। আমি ধরে নিয়েছিলাম বলে কিছু হয় নি।নীচের দুটি বার্থই ওদের ছিল। একটা খুলে মেয়েটিকে শুইয়ে দিলেন ওর বাবা। ক্লান্ত লাগছিল মেয়েটিকে ভীষন। একটু জল খেয়ে শুয়ে পড়লো সেই মেয়ে।
রাতের খাবার খেয়ে আমিও শুয়ে পড়লাম ওপরের বার্থে। ওরা স্বামী স্ত্রী কিছু কথা বলছিলেন নিজেদের মধ্যে ট্রেনের শব্দে আমি তা শুনতে পাচ্ছিলাম না। অনেক রাত অবধি জেগে ছিলাম আমি। মেয়েটি আমায় টানছিল। মাঝে মাঝেই দেখছিলাম ওর দিকে চেয়ে। সামান্য কিছু খেয়েছে মেয়েটি।বেশ কয়েকটা ওষুধও। জোরে ছুটে চলা রাতের ট্রেনের আধো অন্ধকারে অপরূপ লাগছিল সেই মেয়েকে। ট্রেনের কামরার দুলুনি তে ট্রেন ছুটে চলছিল তার নির্দিষ্ট গন্তব্যপথে। কখন আমিও ঘুমিয়ে পড়েছিলাম খেয়াল নেই আমার।
ঘুম ভাঙলো যখন তখন দেখি ট্রেন দাঁড়িয়ে আছে এক স্টেশনে। আলো ফোটেনি তখনো। ঘড়িতে দেখি সাড়ে চারটে। বুঝলাম ভাইঝাক এসে গেল। নেমে একবার বাথরুম থেকে ঘুরে এলাম। প্রায় সবাই ঘুমোচ্ছে কামরায়। বিভিন্ন রকম নাকডাকা শুনতে পাওয়া যায় এই সময়। যিনি সবচেয়ে জোরে নাক ডাকছেন তিনিই হঠাৎ ঘুম ভেঙে উঠে বলেন - বাপরে, কি নাক ডাকার বহর!
দেখলাম ওরা তিনজনই ঘুমোচ্ছেন। মেয়েটির মুখ ঘোরানো উল্টো দিকে তাই তার মুখ দেখতে পেলাম না।
ট্রেন ছাড়লো। আমার চোখ লেগে এল একটু। তারপর চোখ তাকিয়ে দেখি আলোয় কামরা ভরে গিয়েছে। আমায় উঠে বসতে দেখে মেয়েটি বললো একটু হেসে
-- গুড মর্নিং।
সত্যিই, মর্নিংটা গুড হয়ে গেল আমার। নীচে নামতেই যে প্রশ্নটা আসবে ভেবেছিলাম সেটাই এল। মেয়েটি বললো
-- ট্রেনটা আবার হাওড়ার দিকে যাচ্ছে কেন? বললাম - না, ঠিকই যাচ্ছে।
ট্রেন চলেছে। রাত্রে ঘুমিয়ে মেয়েটিকে অনেক ফ্রেশ লাগছিল।
অনেক কথা বলছিল আমার সংগে। আমার সাথে কোন মেয়ে এর আগে এত কথা বলে নি কোনদিন। ভাল লাগছিল আমার। মেয়েটির বাবা মা খুব কম কথা বলছিলেন। বুঝতে পারছিলাম খুবই দুশ্চিন্তায় আছেন।
আমায় বললেন - তুমি ভেলোরে গেছো আগে। বললাম - মাকে নিয়ে গিয়েছিলাম একবার। ওরা বললেন - কোন চেনাজানা নেই। কি যে হবে! সাড়ে দশটা নাগাদ বিজয়ওয়াড়া এল। আমি এখান থেকে চিকেন বিরিয়ানী কিনে খাই আর ফ্রুট জুস। ওরা মিলের অর্ডার দিয়ে দিয়েছিলেন। আমি বললাম - ফলের রস খাবেন? খুব ভাল সামনে বানিয়ে দেয়। ওরা নিমরাজী হলেন। নিয়ে এলাম আঙ্গুরের রস। কেমন যেন আত্মীয়তা হয়ে গেল ওঁদের সাথে। পিতৃমাতৃহীন এই যুবকের কি জানি কেন মনে হচ্ছিল এদের সাহায্য করি। আর মেয়েটিকে যে আমার ভাল লাগছিল সে কথা তো আগেই লিখেছি। মনে মনে ঠিক করলাম যাবো ওদের সাথে কাটপাটি। আমার তো স্বাধীন ব্যবসা। আরো কিছুদিন বন্ধ থাকলে কি আর হবে! কিন্তু ওঁদের বলি কি করে? বিজয়ওয়াড়া থেকে চেন্নাই অনেকটা পথ। অনেকেই শুয়ে পড়ছেন। আমি ভদ্রলোককে বলেই ফেললাম - আমার যাওয়ার পথেই পড়বে কাটপাটি। আপনারা রাজী থাকলে আমি আপনাদের সংগে নেমে যেতে পারি কাটপাটিতে।
ভদ্রলোক হাতে চাঁদ পেলেন। বললেন - বাঁচালে বাবা। তোমার মাসীমাকে আমি বলছিলাম যে এই ছেলেটিকে বলবো আমাদের সংগে যদি ভেলোর যায়? ওদের টিকিট বললেন চেন্নাই সেন্ট্রাল থেকে। আমার টিকিট ছিল পরের দিন এগমোর থেকে কন্যাকুমারী এক্সপ্রেসে। চেন্নাইতে নেমে আমার টিকিট ক্যান্সেল করে ম্যাঙ্গালোর এক্সপ্রেসের একটা জেনারেল কামরার টিকিট কাটলাম। ওদেরও ওই ট্রেনেই টিকিট কাটা ছিল। ওঁরা ট্রেন যাত্রা এবং দুশ্চিন্তায় কাবু হয়ে পড়েছিলেন। সাড়ে দশটায় ট্রেন ছাড়লো চেন্নাই সেন্ট্রাল থেকে। সাড়ে বারোটা নাগাদ পোঁছবে কাটপাটিতে। ওঁদের কামরায় তুলে দিয়ে আমি টিটি কে বললাম ওঁদের কথা। কাটপাটিতে নেবে যাবো বলাতে টিটি রাজী হয়ে গেলেন। ওঁদের বললাম - আপনারা একটু শুয়ে নিন আমি ডেকে দেবো আপনাদের।এর মধ্যে মেয়েটির দিকে তাকানোর সময় পাই নি আমি।
কাটপাটিতে নেমে অটো ধরে পৌঁছে গেলাম সি এম সি কাছেই একটা লজে। মাকে নিয়ে এসে এখানেই উঠেছিলাম। ওদের একটা ঘর দিয়ে আমি একটা সিঙ্গল রুম নিলাম। নিজের ঘরে এসে শুলাম যখন তখন ঘড়িতে দেখি প্রায় রাত দুটো।
সকাল দশটার মধ্যেই মাটিকে দেখে নিলেন ডাক্তারেরা। রিপোর্ট দেখলেন সব। একজন বাঙালি ডাক্তার ছিলেন। তিনিই বুঝিয়ে দিলেন মাটির বাবা মা কে কি করতে হবে। ওঁরাও খানিকটা চিন্তামুক্ত হলেন। পরের দিন বেশ কিছু টেস্ট। সিটি স্কান,এসব করে সেই বাঙালি ডাক্তার বললেন অপারেশন করবেন ওরা। মাটির ডান কানের ওপরে একটা ছোট্ট টিউমার আছে। সেটাই অপারেট করবেন ওরা। ওরা অবশ্য জানতেন এই টিউমারটির কথা।
আমার সাথে রোজই কথা হয় মাটির।অনেক কথা। জানলাম ওর ভাল নাম চিরন্তনী। তেইশ বছর বয়েস ওর। আর ওর এক প্রেমিক আছে। কেমন যেন ধাক্কা খেলাম একটা। বললো- ওর বাবা মা জানেন না সেই প্রেমিকের কথা।
আমি বললাম- ভয় করছেনা তোমার? সেই সুন্দর হাসিটা হাসলো মেয়েটা, বললো - আপনি আছেন তো। কিচ্ছু হবে না আমার দেখবেন। ঈশ্বর আপনাকে পাঠিয়েছে আমাদের কাছে বা বলা যায় আপনিই আমাদের ঈশ্বর। মা বলছিল বাবাকে, - এমন ছেলে আজকের দিনে হয়? ঈশ্বর পাঠিয়েছেন ওকে আমাদের কাছে। কি বলবো ভেবে পাচ্ছিলাম না আমি। তবে চিরন্তনীর প্রেমিক আছে শুনে মনে মনে ভীষণ ভেঙ্গে পড়েছিলাম আমি।।
অপারেশনের আগে ওর মাথা নেড়া করে দেওয়া হল। আমি কখনোই ওদের দুজনের সংগে ডাক্তারের সাথে কথা বলতে যাই নি। সেদিনও ভাবছিলাম যাবো না কিন্তু ওর বাবা মা দুজনেই বললেন যে আমাকে যেতেই হবে। মাটি বলেছে আমাকে দেখেই নাকী ও অপারেশন থিয়েটারে ঢুকবে। গেলাম। আমার দিকে বললো - আমার কপালে একটু হাত রাখবেন? রাখলাম হাত। কপালটা ঠান্ডা। আমি ভাবছিলাম কেন ওর একটা প্রেমিক আছে? কেন?
পরবর্তী দু ঘন্টা মনে হল যেন কাটতেই চাইছিল না। দু ঘন্টা নয় প্রায় তিন ঘন্টা পরে বেরোলেন ডাক্তারেরা। বললেন - এখনি কিছু বলবেন না। বায়োপ্সি করতে পাঠিয়েছেন দু দিন পর বলবেন। তবে অপারেশন সাক্সেসফুল।
দেখলাম চিরন্তনীকে। মাথায় ব্যান্ডেজ করা। জ্ঞান প্রায় নেই বললেই চলে। ওর মা আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললেন। প্রায় সদ্য কয়েকদিনের পরিচিত এক পরিবারের জন্যে তখন আমার গলার কাছেও কিছু যেন আটকে আছে মনে হচ্ছিল।
পরের দিনই জ্ঞান এল চিরন্তনীর।
আমি ঢুকি নি ঘরে। কিছু বাদে ওর বাবা বেরিয়ে এসে বললেন - তোমাকে ভেতরে যেতে বলছে মাটি। ভাল আছে ও।
ঢুকলাম ভেতরে দরজার দিকে চেয়ে ছিল ও। আমাকে দেখেই আবার হাসলো। চোখ দুটো ক্লান্ত।ডান হাতটা বাড়িয়ে দিলো। আমি ধরলাম সেই হাত। হাতটা গরম। কথা বললাম না।
তারপর সময় কাটতে লাগলো দ্রুতগতি তে। বায়োপ্সি রিপোর্ট দেখে ডাক্তারেরা বললেন, -না ভয়ের কিছু নেই। ম্যালিগ্যান্ট নয়। ফলে জীবন সংশয় নেই। দশ দিনে ছেড়ে দেবেন। ওর বাবা মায়ের মুখে হাসি। ও আমায় বললো - কি মশাই? বলেছিলাম না আমার কিছু হবে না? আপনি ঈশ্বরপ্রেরিত।।
দশ নয় পনেরো দিন পর ওদের নিয়ে আমি আবার গেলাম চেন্নাই। চেনাশোনা লোক ধরে এ সি থ্রী টায়ারের টিকিট কেটে দিলাম। সকালে করমন্ডলে তুলে দেবার সময় চিরন্তনীকে বললাম - বিয়ের সময় খবর দিও। ও হেসে বললো - অবশ্যই। আপনি না থাকলে বিয়েই করবো না আমি। ওর বাবা মা দুজনেই আমায় জড়িয়ে ধরলেন।চোখে জল। আমি অনেক কষ্টে নিজেকে সামলালাম। ওর মা আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন - সত্যিই তোমার কেউ নেই বাবা? আমি বললাম - না নেই মাসিমা। তবে এই তো আপনারা রইলেন। করমন্ডল ছেড়ে দিল।
সন্ধেবেলা এগমোর থেকে ট্রেন ধরে নাগেরকয়েলে নামলাম ভোর রাত্তিরে । তারপর বাসে আরো দু ঘন্টা জার্ণি করে বাড়ি।
সেদিন আর দোকান খুলি নি। টেনে ঘুমোলাম। তারপর উঠে গেলাম বাজারে। বেশ কিছু বছর আছি এখানে। অনেকদিন বাদে দেখে অনেকেই খুশি হলেন। একটি দোকানে বসে জিনিস কিনছিলাম মোবাইল বাজলো। পকেট থেকে বের করে দেখি চিরন্তনীর বাবা। বললেন ঠিক ঠাক পোঁছেছো তো বাবা? তোমার ঋণ আমরা জীবনে শোধ করতে পারবো না। ওঁর স্ত্রীও সেই একই কথা বললেন।তারপর বললেন - নাও মাটির সাথে কথা বলো। আমার কেমন বুক ধড়পড় করতে শুরু করলো। চিরন্তনী বললো - কি মশাই। ঠিকঠাক পৌঁছেছেন তো? বললাম - তুমি ঠিক আছ তো? রাস্তায় কোন অসুবিধে হয়নি তো? বললো - না না। এখন একটু মাথার যন্ত্রনা হচ্ছে। আজ রাত্রে ঘুমোলেই ঠিক হয়ে যাবে। বললো, ওর নিজের একটা মোবাইল আছে। সেটা থেকে পরেরদিন ফোন করবে।
পরেরদিন করেছিল ফোন। তারপর থেকে এই তিন বছর প্রায় রোজই কথা বলি আমরা। ও বেশ কিছুদিন হল আমায় তুমি বলে। ওকে জিজ্ঞাসা করি - তোমার প্রেমিক কেমন আছে? ও বলে - ফোনে কথা হয়। ও তো বাড়িতে আসতে পারে না। ও আসতে আসতে সুস্থ হয়। বলে দেখা হয় এখন ওর প্রেমিকের সাথে। আমি কয়েকদিন ফোন ধরি না। করিও না। ও মেসেজ করে - কি হল,ফোন ধরছো না কেন? শরীর ঠিক আছে তো। এমন করেই দিন কাটে। ও এস এস সি পাস করে স্কুলে চাকরী পায়। বলি - এবার বিয়েটা করো। বলে- হবে, হবে দাঁড়াও। মাকে বলেছি। মা বলেছে বাবাকে।তুমি কিন্তু এসো বিয়েতে। আমি একটু কথা বলে ফোন রেখে দিই।
মাসখানেক আগে একদিন চিরন্তনী আমায় একটা মেসেজ করে। তাতে লেখা - তুমি একটা হাঁদারাম। আমার কোন প্রেমিক নেই। বাংলাদেশে যে মেয়ে থেকে থেকে অজ্ঞান হয়ে যায় তার কোন প্রেমিক থাকতে পারে না। তবে আমার এক ঈশ্বর আছে। সেই ঈশ্বর কী একসময় অজ্ঞান হয়ে যেত এমন মেয়েকে বিয়ে করবে। উত্তর হ্যাঁ হলে যেন সেই মেয়েটির বাবাকে ফোন করে বলে যে সে তার মেয়েকে বিয়ে করতে চায়। তিনি ফোনের অপেক্ষায় আছেন।
চারিদিকে যেন লক্ষ রঙমশাল জ্বলে উঠলো।
সেই ঈশ্বর যাচ্ছে জানুয়ারীতে বিয়ে করতে কলকাতায়।ঈশ্বরের বিয়ে।