দুর্গাপুরের অন্যতম গর্ব ডিপিএল কার্যত ধ্বংসের মুখে ছোট বড় মাঝারি শিল্প গুলোতে শ্রমিকদের ন্যূনতম অধিকার বিপন্ন।শাসক দলের শ্রমিক ইউনিয়ন ছাড়া আর কারোর কথা বলার অধিকার নেই।এর মধ্যেই প্রতিবাদের ভাষা হারিয়ে যেতে দেয় নি সিপিআইএম।ধীরে ধীরে সংঘবদ্ধ করে রাজপথে প্রতিবাদের চিত্রপট তৈরি করেছে।আজ দুর্গাপুরের বুকে সেই বিক্ষোভ যেন দাবানলের রূপ নিলো।সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের জনসভা কার্যত জনপ্লাবনের রূপ নিলো।
দুর্গাপুরের পুর নির্বাচনের দাবি তো ছিলই সেই সঙ্গে শহরে দুষ্কৃতী দাপট শহরের বুকে খুন ধর্ষণের সংখ্যা বৃদ্ধি দেখলে মনে হতেই পারে শহরে আইন যেন নিদ্রায় এমন অবস্থায় শহর বাঁচানোর ডাক দিয়ে সিপিআইএম নেতৃত্ব রাজপথে প্রতিবাদের ঢেউ তুললেন।দুর্গাপুরের আরেকটি বন্ধ হওয়া শিল্প এইচ এফ সি কারখানার গেটে মানুষের প্রতিবাদের বিস্ফোরণ ঘটলো।
সমাবেশের শুরুতে লহরী গ্রূপের সংগীতে শীতের দুপুরে উত্তাপের জোয়ার এনে দিলো, সমাবেশের শুরুতেই মেজাজ এনে দিল লড়াইয়ের যা শহর কে রক্ষা করার শপথ ।বক্তব্য রাখতে গিয়ে সিপিআইএম জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলেন দুর্গাপুর এর আইন এখন কার্যত সমাজবিরোধীদের হাতে ,গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের হুমকি সেই সঙ্গে খুন জখম ধর্ষণের ঘটনা দুর্গাপুরের ঐতিহ্যকে কালিমালিপ্ত
করেছে।
অবিলম্বে শহর বাঁচাতে প্রয়োজন মানুষের জোট। সেই জোট গঠনের লক্ষ্যেই প্রতিনিয়ত কাজ করার অঙ্গীকার শহর বাঁচাতে শিল্প বাঁচাতে।
সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সিপিআইএম পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চ্যাটার্জি বলেন রাজ্য জুড়ে দুর্নীতির বেড়াজাল যার ফলে বেকার যুবক দের স্বপ্ন ভঙ্গ সেইসঙ্গে প্রান্তিক মানুষদের ন্যূনতম অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ার ঘটনা সবকিছুর নিস্তার পেতে সরকার বদলের ডাক ।সরকার বদলের ডাক মজবুত করতেই মানুষের সংঘবদ্ধ লড়াই।
সমাবেশের মূল বক্তা মহম্মদ সেলিম বলেন রাজ্য কিংবা কেন্দ্র উভয়ই মানুষের অধিকার হরনের ষড়যন্ত্র করে চলেছে , একদিকে বিজেপি এর নেতৃত্বে সরকার পেট্রোল ডিজেল কেরোসিন রান্নার গ্যাসের লাগামহীন দাম বৃদ্ধি রুখতে ব্যর্থ আরেকদিকে ধর্মীয় ভাবাবেগকে কাজে লাগিয়ে মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির খেলা চলছে। রাজ্যে মানুষের সাথে প্রতারণা চলছে একদিকে ছায়াযুদ্ধ আরেকদিকে কেন্দ্রে বোঝাপড়ার ইঙ্গিত।দুর্নীতির চরম সীমায় পৌঁছেছে তৃণমূল এমন অবস্থায় রাজ্য বাঁচাতে অবিলম্বে মানুষকে রাস্তায় নামার আহবান করলেন তিনি।বিজেপি তৃণমূলের নেতা পরিবর্তন দল বদলের ঘেরাটোপে যার ফলে মানুষের স্বার্থ তো সুরক্ষিত থাকছেই না বাংলার রাজনীতিও কলুষিত হচ্ছে এক নীতি আদর্শহীন দৃষ্টিভঙ্গিতে।দুই দলের কোনো নেতাই আজ এক দলে কাল যে আরেক দলে যাবে না তার কোনো নিশ্চয়কতা নেই বলে কটাক্ষ করেন সেলিম।
তাই রাজ্য যখন মন্ত্রী নেতাদের বিপুল টাকার হদিস পাচ্ছে আরেকদিকে কয়েকশো দিন ধরে রাস্তায় আন্দোলনে চাকরি প্রার্থীরা এরকম বাংলার স্বপ্ন দেখেনি কেউ।আরেকদিকে আবাস দুর্নীতি নিয়ে কটাক্ষ করতে গিয়ে সেলিম বলেন একদিকে গৃহহীন মানুষ যখন একটি ঘরের স্বপ্ন দেখছে অন্যদিকে তৃণমূলের নেতারা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও সরকারি প্রকল্পের ঘর পাচ্ছেন।তৃণমূলের সবাই চোর না হলেও যারা কিছু স্বপ্ন বুকে করে পরিবর্তন করেছিল তাদের ফিরে আসার আহবান করলেন সেলিম ।দুর্গাপুরের ভোট লুঠের নায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি এর কথা টেনে বলেন ভোট লুঠ করে এখন মানুষের কাজ করতে বিজেপি যাচ্ছেন আসলে এটি দুটো দল নয় আদপে একটাই যা নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে নাগপুর থেকে। তাই রাজ্য বাঁচাতে প্রয়োজন মানুষের ঐক্য ,সেই ঐক্য গড়ে তোলার লক্ষ্যেই গ্রাম কিংবা শহরের বিভিন্ন প্রান্তে
সমাবেশ সংগঠিত করে বাইনারি পলিটিক্সের মিথ ভাঙতেই হবে।
সমাবেশ ধারে ভারে এতটাই ছিল যে সমাবেশ শেষে হওয়ার পরেও দীর্ঘক্ষণ যানজট হতে দেখা যায়।রাজনৈতিক মহলের মতে শুধুমাত্র তিনটি এরিয়া কমিটি অর্থাৎ পূর্ব এরিয়া ১,২,৩ এর সমাবেশ আজকের সমাবেশ এর মেজাজ স্পষ্ট বার্তা পুরসভার ১৫ টি ওয়ার্ড বামেদের পক্ষে ব্যাপক লড়াই দেওয়ার ইঙ্গিত বহন করলো আজকের সমাবেশ ।