বিদ্যাসাগর, যার অর্থ আক্ষরিকভাবে "জ্ঞানের সমুদ্র", বাংলা ইতিহাসের একজন স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন একজন বহুমুখী প্রতিভা যিনি শিক্ষা, সমাজ সংস্কার এবং সাহিত্যে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন।
বিদ্যাসাগর জন্মগ্রহণ করেন ১৮২০ সালে একটি দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে। তাঁর প্রতিভা এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তিনি খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছান। সংস্কৃত কলেজ, কলকাতা থেকে সংস্কৃত পড়াশোনায় অসামান্য সাফল্যের জন্য তিনি "বিদ্যাসাগর" উপাধি লাভ করেন।
বিদ্যাসাগর সবার জন্য শিক্ষার একজন উদ্যমী সমর্থক ছিলেন। তিনি ছেলেমেয়েদের জন্য বেশ কয়েকটি স্কুল এবং কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন, যার মধ্যে রয়েছে বেথুন স্কুল ফর গার্লস, যা ভারতের প্রাচীনতম বালিকা বিদ্যালয়। তিনি বাংলা বর্ণমালা এবং লিপি সংস্কারেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
বিদ্যাসাগর নারীর অধিকারের একজন দৃঢ় সমর্থক ছিলেন। তিনি হিন্দুধর্মের রক্ষণশীল প্রথা সতী প্রথার বিরুদ্ধে লড়াই করেন। তিনি বিধবা বিবাহ বৈধ করার জন্যও প্রচার চালান। ১৮৫৬ সালে, তিনি হিন্দু বিধবা পুনর্বিবাহ আইন পাস করতে সক্ষম হন, যা ভারতে বিধবা বিবাহ বৈধ করে তোলে।
বিদ্যাসাগর ছিলেন একজন প্রবীণ লেখক। তিনি বাংলায় পাঠ্যপুস্তক, প্রবন্ধ এবং উপন্যাস রচনা করেন। তিনি সংস্কৃত থেকে বাংলা ভাষায় বেশ কয়েকটি শাস্ত্রীয় গ্রন্থও অনুবাদ করেন। তাঁর রচনাবলী বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি জনপ্রিয় করতে সাহায্য করেছে।
বিদ্যাসাগর ছিলেন একজন সত্যিকারের দ্রষ্টা। তিনি ভারতীয় সমাজের উন্নতির জন্য তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছেন। তিনি ছিলেন শিক্ষা এবং সমাজ সংস্কার ক্ষেত্রে একজন পথিকৃৎ। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে তাঁর অবদান অপরিসীম।
বিদ্যাসাগরের ঐতিহ্য আজও আমাদের অনুপ্রাণিত করে। তিনি এমন সকলের জন্য একজন আদর্শ যারা বিশ্বে একটি পার্থক্য করতে চান।