সিআইটিইউ’র সাধারণ সম্পাদক তপন সেন বলেছেন, শ্রমিক এবং কৃষক সংগঠনগুলির যৌথ আহ্বানে ৩ দিন ধরে সারা দেশে আন্দোলন চলছে। তিনি কলকাতার জনসমুদ্র গড়ার জন্য অভিনন্দন জানান।
সেন বলেন, ২০২০ সালে ২৬ নভেম্বর ধর্মঘট হয়েছিল। সিআইটিইউ করে। সেই দিন থেকেই কৃষকরা আন্দোলন শুরু করেন। পরবর্তী কালে সেই আন্দোলনের ফসল সংযুক্ত কিষান মোর্চা।
তিনি বলেন, এই আন্দোলন মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে তুলেছে। ঐক্যবদ্ধ জনতা সবচেয়ে মারাত্মক শত্রুকেও হারাতে পারে।
কলকাতা পুলিশ এই অবস্থান আটকাতে চেয়েছিল। কিন্তু সিআইটিইউ নেতারা বলেছিলেন, অনুমতি না দিলে কলকাতা স্তব্ধ করে দেওয়া হবে। পুলিশ পিছু হঠেছে।
সেন বলেন, স্বাধীনতার পরে এই প্রথম শ্রমিক কৃষকরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন এই মাত্রায়। শত্রুও চিহ্নিত। সেই শত্রু হল কর্পোরেট। সে সমাজের সমস্ত অংশের মানুষের শত্রু।
তিনি বলেন, দেশের ৩৭ শতাংশ ৬০০০ টাকাও রোজগার করেন না। আর মাত্র ১ শতাংশ মানুষের দখলে সম্পদের ২৫ শতাংশ। এরা জিএসটি দেয় ৩ শতাংশ। আর গরিব দেয় ৬৫ শতাংশ। গরিবের ওপর, সাধারণ মানুষের ওপর করের বোঝা চাপছে। সবটাই লুটের অর্থনীতি, বিদেশি পুঁজির সুবিধা করে দিতে।
সেন বলেন, এই ব্যবস্থাকে ওপড়াতে বিজেপিকে হারাতে হবে। আদানিদের আগ্রাসন আটকাতে সর্বাত্মক প্রতিরোধে যেতে হবে। বিদ্যুৎ, বন্দর, বিমানবন্দরের পরিকাঠামো স্তব্ধ করে দিতে হবে।
এর জন্য প্রয়োজন জনতার ঐক্য। সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে হারাতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকার লুটের অর্থনীতি বজায় রাখতে মানুষের মধ্যে বিভেদ বজায় রাখতে চাইছে।
কর্পোরেট সাম্প্রদায়িক জোটকে হারাতে হবে। সমাজে হাহাকার তৈরি করছে। এদের হারানো না গেলে দেশের অর্থনীতির হাল ফিরতে পারেনা। দারিদ্রায়ণের বাতাবরণে উন্নয়ন কিংবা কর্মসংস্থান হতে পারে না। অর্থনীতি সঙ্কুচিত হয়।
সেন বলেন, বিজেপি স্মার্ট মিটার লাগাতে গিয়ে প্রতিরোধের মুখে পড়েছে। কাশ্মীর, পণ্ডীচেরি সহ গোটা দেশে এটা হচ্ছে। এরাজ্যেও স্মার্ট মিটার লাগাতে এলে ভাগিয়ে দিতে হবে। কৃষকরা পেরেছেন। শ্রমিকরা বেসরকারিকরণ রুখে দিয়েছেন বহু জায়গায়। গোটা দেশে এটা ছড়িয়ে দিতে হবে।তিনি বলেন, আমাদের মন্ত্র হবে প্রতিরোধ এবং সরকারি নীতি প্রণোয়নে অস্বীকার।
সিআইটিইউ, এআইইউসিটিইউ, এআইটিইউসি, এআইইএফইউটি, কৃষক সংগঠনগুলির যৌথ আহ্বানে ৩ দিন ধরে সারা দেশে আন্দোলন চলছে। এই আন্দোলনের লক্ষ্য হল লুটের অর্থনীতি, বিদেশি পুঁজির আগ্রাসন, সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরুদ্ধে লড়াই।