গতকাল ১৩ ই জানুয়ারি দুর্গাপুরের ইস্পাত অঞ্চলের নেতাজি ভবনে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের উদ্যোগে পশ্চিম বর্ধমান জেলার নাট্য উৎসব ও পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
দুর্গাপুরের ইস্পাত বিজ্ঞান কেন্দ্রের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো পশ্চিম বর্ধমান জেলার নাট্য উৎসব । মানুষের জন্য বিজ্ঞান এই বার্তা কে সামনে নিয়ে এলাকায় সচেয়নতার বার্তা নিয়ে অনুষ্ঠিত হলো এক পদযাত্রা।রাজ্য জুড়েই চলছে এই ধরণের বার্তা দেওয়ার কাজ।দেশে যখন এক অস্থিরতার মেঘ গ্রাস করছে ধর্মীয় বিভাজন কিংবা শিক্ষায় অবৈজ্ঞানিক ভাবনার রূপায়ণ, সমাজে কুসংস্কারের বেড়াজাল ।সেই সময় পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ এক লড়াইয়ে অবতীর্ণ।
পদযাত্রায় অংশ নেন পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের রাজ্য নেতৃত্ব সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদক কল্লোল ঘোষ এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। পদযাত্রা শেষে পতাকা উত্তোলন করেন ইস্পাত বিজ্ঞান কেন্দ্রের অন্যতম নেতৃত্ব অরুন্ধতী ভাদুরী।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মুক্তমঞ্জরী এর সুমধুর কণ্ঠে অনুষ্ঠানে এক নতুন প্রানের সঞ্চার হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের রাজ্য নেতৃত্ব সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "দেশে যখন বিভাজনের নীতি স্পষ্ট সেখানে দাঁড়িয়ে বিজ্ঞান মঞ্চের দায়িত্ব বেড়ে যায়। তাই বেশি করে বিজ্ঞানের প্রসার খুব জরুরি। সেই লক্ষ্যে গোটা রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছে বিজ্ঞানের জন্য আন্দোলন। শিক্ষার ক্ষেত্রে এক বৈজ্ঞানিক ভাবনা নিয়ে আসতে চলছে সরকার, তার বিরুদ্ধে বিজ্ঞান মঞ্চ ধারাবাহিক আন্দোলন জারি রেখেছে। এছাড়াও দেশে যুক্তিবাদী আন্দোলন গড়ে তুলতে ওয়ার্কশপ আয়োজন করছে বিজ্ঞান মঞ্চ। সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন জারি রাখছে কারণ যখন জঙ্গল এর অধিকার, এছাড়াও দূষণে যখন স্বাস্থ্য বিপন্ন সেখানে বিজ্ঞান মঞ্চ আন্দলনের রূপরেখা তৈরি করেছে। তিনি জোর দেন বেশি করে কিশোর কিশোরীদের মধ্যে বিজ্ঞান মনস্ক ভাবধারা গড়ে তোলার।"
উৎসবে ছয়টি নাটক মঞ্চস্থ হয়। প্রথম দর্শনে ডাক্তার কাদম্বিনী বিজ্ঞান কেন্দ্রের প্রযোজনায় দুলাল চন্দ্র মন্ডলের নাটক "জাগরণ" মঞ্চস্থ হয়। দ্বিতীয় দর্শনে আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু বিজ্ঞান কেন্দ্র (কুলটি)-এর বণিকনাট্য গোষ্ঠীর প্রযোজনায় সোনালী বিশ্বাসের নাটক "আলোকঝর্ণা" মঞ্চস্থ হয়। তৃতীয় দর্শনে আচার্য সত্যেন্দ্রনাথ বসু বিজ্ঞান কেন্দ্রের প্রযোজনায় "বোম্বাগড়ের রাজা" নাটক মঞ্চস্থ হয়। চতুর্থ দর্শনে APJ আব্দুল কালাম বিজ্ঞান কেন্দ্রের প্রযোজনায় কাকলী দাশগুপ্তের নাটক "ডাইকছেদামোদর" মঞ্চস্থ হয়। পঞ্চম দর্শনে APJ আব্দুল কালাম বিজ্ঞান কেন্দ্রের প্রযোজনায় "উত্তরণ" নাটক মঞ্চস্থ হয়। ষষ্ঠ দর্শনে APJ আব্দুল কালাম বিজ্ঞান কেন্দ্রের নাটুকেনটবর এবং ইস্পাত বিজ্ঞান কেন্দ্রের যৌথ প্রযোজনায় "উত্তরণ" নাটক মঞ্চস্থ হয়।
উৎসবের সমস্ত নাটকই বিজ্ঞানকেন্দ্রিক বিষয়বস্তু নিয়ে মঞ্চস্থ হয়। নাটকগুলির মাধ্যমে বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়কে দর্শকদের কাছে সহজ ও আকর্ষক উপায়ে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়।
উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক প্রদ্যুৎ মুখার্জী বলেন, "বিজ্ঞান মঞ্চের লক্ষ্য হল বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করা। নাট্য উৎসবের মাধ্যমে আমরা এই লক্ষ্যকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।"
উৎসবে উপস্থিত দর্শকদের মধ্যে নাটকগুলির প্রশংসা করেন। তারা বলেন, "নাটকগুলি বিজ্ঞানের বিষয়গুলিকে খুবই সুন্দর ও আকর্ষক উপায়ে তুলে ধরেছে।"