পাপুয়া নিউ গিনিয়া ব্যাপক দারিদ্র্য, জনসাধারণের অস্থিরতা এবং সরকারের অনড় অবস্থানের কারণে পঙ্গু অর্থনৈতিক সংকটের কবলে পড়ে গৃহযুদ্ধে ঢুকে পড়েছে। এই সপ্তাহের শুরুতে প্রেসিডেন্ট জেমস মারাপে জরুরি অবস্থা ঘোষণার ডাক দিলেও তা অবহেলিত মনে হচ্ছে। দেশ জুড়ে সহিংসতা ও লুটপাটের ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
পাপুয়া নিউ গিনিয়ার বর্তমান দুর্দশার মূল কারণ হলো দেশটির মারাত্মক অর্থনৈতিক বাস্তবতা। প্রচুর খনিজ সম্পদ থাকা সত্ত্বেও দেশের প্রায় ৪০% জনগণ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। জীবনযাত্রার মানের অবিরাম বৃদ্ধির মুখে সরকারি কর্মচারী এবং শ্রমিকরা মাসের পর মাস বেতন বৃদ্ধির দাবি জানাচ্ছেন। কিন্তু, নিজের আর্থিক সীমাবদ্ধতা এবং চাপের কাছে নতি স্বীকার না করতে চাওয়া সরকার বারবার তাদের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।
এই চাপা ক্ষোভ গত কয়েক সপ্তাহে বিস্ফোরণ ঘটেছে। শান্তিপূর্ণ জনপ্রতিবাদগুলি হতাশার রূপ নিতে বিকট সহিংস প্রদর্শনে পরিণত হয়েছে। শান্তি ফিরিয়ে আনতে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ উত্তেজনা আরও বাড়িয়েছে।
এই গোলযোগের মাঝে, পাপুয়া নিউ গিনিয়ার অর্থনৈতিক অপচালনা এবং অস্থিতিশীল ঋণের মাত্রার উদ্বেগ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক মুদ্রা অর্থ সংস্থা (আইএমএফ) একটি গুরুত্বপূর্ণ ঋণ প্যাকেজ প্রদানে অস্বীকার করে। দেশের ইতিমধ্যেই নাজুক অর্থনীতিতে এটিই শেষের আঘাত হিসেবে কাজ করে, যা গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে।
এখন দেশ জুড়ে লুটপাট ও অগ্নিকাণ্ডের খবর আসছে। অপরিहार্য অবকাঠামো এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উত্তেজিত জনতার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। দেশজুড়ে বিভিন্ন দলের মধ্যে সংঘর্ষ বেড়ে গেছে, হাজার হাজার মানুষ ঘরহীন হয়ে পড়ছে এবং মানবিক দুর্যোগের আশঙ্কা বাড়ছে।
এই অবস্থায় প্রেসিডেন্ট মারাপের জরুরি ঘোষণা শান্তি ফিরিয়ে আনতে এবং অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত করতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে পাপুয়া নিউ গিনিয়াকে সুস্থিতির দীর্ঘ ও কঠিন পথের মুখোমুখি দাঁড়াতে হবে।