" " //psuftoum.com/4/5191039 Live Web Directory রাজা রামমোহন রায়: বাংলার নবজাগরণের পথপ্রদর্শক জন্মদিন উপলক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি //whairtoa.com/4/5181814
Type Here to Get Search Results !

রাজা রামমোহন রায়: বাংলার নবজাগরণের পথপ্রদর্শক জন্মদিন উপলক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি

 রাজা রামমোহন রায়: বাংলার নবজাগরণের পথপ্রদর্শক জন্মদিন উপলক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি 

শংকর পাল

 
 
 
 
 

বাংলার নবজাগরণের অন্যতম ধ্রুবতারা রাজা রাম মোহন মোহন রায় যিনি বাংলার সমাজ কে এক আধুনিক ভাবনায় রূপান্তরিত করার চেষ্টা করেছিলেন , সেই মনীষীর জন্মদিবসে কয়েটি কথা।  রাজা রাম মোহন রায় 18 এবং 19 শতকের ভারতে যে উল্লেখযোগ্য সংস্কার এনেছিলেন তার জন্য আধুনিক ভারতীয় রেনেসাঁর পথপ্রদর্শক হিসাবে বিবেচিত হয়। তাঁর প্রচেষ্টার মধ্যে নৃশংস ও অমানবিক সতীপ্রথার বিলুপ্তি ছিল সবচেয়ে বিশিষ্ট। পরদা প্রথা এবং বাল্যবিবাহ নির্মূলেও তাঁর প্রচেষ্টা সহায়ক ছিল। 1828 সালে, রাম মোহন রায় ব্রাহ্মসমাজ গঠন করেন, কলকাতায় ভ্রমদের একত্রিত করে, একদল লোক, যারা মূর্তি পূজায় বিশ্বাসী ছিল না এবং জাতপাতের বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে ছিল। 1831 সালে মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় আকবর তাকে 'রাজা' উপাধি দিয়েছিলেন। বেন্টিকের সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধ করার নিয়ম যাতে বাতিল না হয় তা নিশ্চিত করার জন্য রায় মুঘল রাজার দূত হিসেবে ইংল্যান্ড সফর করেন।রাজা রাম মোহন রায় 1774 সালের 14 আগস্ট বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির হুগলি জেলার রাধানগর গ্রামে রমাকান্ত রায় এবং তারিণী দেবীর ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা একজন ধনী ব্রাহ্মণ এবং গোঁড়া ব্যক্তি ছিলেন এবং কঠোরভাবে ধর্মীয় কর্তব্য পালন করতেন। 14 বছর বয়সে রাম মোহন সন্ন্যাসী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন, কিন্তু তার মা এই ধারণার তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন এবং তিনি তা বাদ দেন।

যদিও রাজা রাজা মোহন কে ধর্মীয় নেতা বলা যায় কিনা তা নিয়ে দীর্ঘ বিতর্ক রয়েছে , তার কর্মকান্ডে তিনি নাস্তিক হিসেবে ও পরিচিতি ছিলেন।  রায় মূর্তি পূজা এবং হিন্দু ধর্মের গোঁড়া আচার-অনুষ্ঠানের বিরোধী ছিলেন। তিনি বৈজ্ঞানিক ভাবনাকেই প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন যার জন্য তৎকালীন হিন্দু গোড়ামি ভাবনার সাথে সংঘাত হয়েছিল। শিক্ষার প্রসারে তার গুরুত্যপূর্ণ ভূমিকা ইতিহাস স্মরণ করছে তিনি মনে করতেন শিক্ষা ছায়া কোনো সমাজ বা সভ্যতা এগিয়ে যেতে পারে না। তিনি 1816 সালে কলকাতায় ভারতের প্রথম ইংরেজি মাধ্যম স্কুল শুরু করেন যা পরে অ্যাংলো-হিন্দু স্কুল নামে পরিচিত হয়।যদিও অনেক সমালোচক বলেন মার্তৃভাষা শিক্ষার পরিবর্তে তিনি ইংরেজি ভাষায় বেশি জোর দিয়েছিলেন।  

তার জীবনের সেরা কাজের মধ্যে অবশ্যি ইতিহাসের মাইলস্টোনে  স্থান পেয়েছে ভারতীয় সমাজের সংস্কার ও আধুনিকীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের কৃতিত্ব, সেই লক্ষ্যেই তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ব্রাহ্মসমাজ। ব্রাহ্মসভা উনবিংশ শতাব্দীতে স্থাপিত এক সামাজিক ও ধর্মীয় আন্দোলন যা বাংলার পূনর্জাগরণের পুরোধা হিসেবে পরিচিত লাভ করে। রামমোহনের ধর্মীয় সত্য অনুসন্ধানের তৃষ্ণা তাকে উদার মন নিয়ে সকল গুরুত্বপূর্ণ ধর্মের শাস্ত্রসমূহ অধ্যয়নে প্রণোদিত করে। এভাবে তিনি শুধু সংস্কৃত ভাষায় হিন্দু ধর্মশাস্ত্রসমূহ, যেমন বেদ , অধ্যয়ন করেই ক্ষান্ত হন নি; তিনি আরবি ভাষায় কুরআন এবং হিব্রু ভাষা ও গ্রিক ভাষায় বাইবেল পাঠ করেন। বিভিন্ন ধর্ম অধ্যয়ন তার মনে দৃঢ়প্রত্যয় জন্মায় যে, যেহেতু প্রত্যেক ধর্মেরই উদ্দেশ্য অভিন্ন, যথা, মানব জাতির নৈতিক পুনর্জাগরণ, তাই পরিবর্তিত সময়ের প্রেক্ষাপটে প্রত্যেক ধর্মের পুনর্ব্যাখ্যা ও পুর্নমূল্যায়ন প্রয়োজন। সুতরাং তিনি চিন্তা করে দেখলেন যে, তার পক্ষে হিন্দুধর্ম ত্যাগ করে অন্য কোন ধর্ম গ্রহণের পেছনে কোন যুক্তি নেই। তিনি প্রত্যেক ধর্মের গোঁড়ামি, শাস্ত্রীয় আচারপালন ও কুসংস্কার বাদ দিয়ে সর্বজনীন নৈতিক উপদেশাবলি গ্রহণ করবেন। কিছুদিন যাবৎ অনেকটা অন্ধের মতো অবসন্ধানের পর ১৮২৮ সাল নাগাদ তার ধর্মীয় ধ্যান-ধারণা কিছুটা স্পষ্ট রূপ লাভ করে।  
রাম মোহনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ সতী দাহ প্রথা রদ করে বাংলার নারীদের প্রথম স্বাধীনতার সুখ বয়ে এনেছিলেন।  তৎকালীন হিন্দু সমাজে সবচেয়ে নিকৃষ্ট ও ভয়াবহ রীতির অন্যতম ছিল সতীদাহ।  যে রীতি কে সামনে রেখে বাংলার নারীদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হতো।  বেঁচে থাকার অধিকার টুকু আগুনের শিখায় নিমজ্জিত হতো।  সিনেমার হিরোদের মতোই আবির্ভাব রাজা রাম মোহন রায়ের তার বলিষ্ঠ যুক্তি এই প্রথাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।  যদিও এই প্রথার বিরুদ্ধে ধারাবাহিক লড়াই চলেছিল এই বঙ্গে রাম মোহন রায়ের লড়াইয়ের আগে থেকেই। সতীদাহের বিরুদ্ধে প্রধান প্রচারক ছিলেন খ্রিস্টান ও হিন্দু সংস্কারক যেমন উইলিয়াম কেরি এবং রামমোহন রায়। ১৭৯৯ সালে, অভিসিঁচনকারী ধর্মপ্রচারক, কেরি প্রথম স্বামীর অন্ত্যেষ্টি চিতায় বিধবাকে পোড়ানোর দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেছিলেন। এরফলে, কেরি এবং তার সহকর্মী জোশুয়া মার্শম্যান ও উইলিয়াম ওয়ার্ড সেই বিন্দু থেকে সতীদাহের বিরোধিতা করেন, এর বিলুপ্তির জন্য তদবির করেছিলেন। শ্রীরামপুর ত্রয়ী নামে পরিচিত, কেরিরা এই প্রথাকে জোরপূর্বক নিন্দা করে প্রবন্ধ প্রকাশ করে এবং ভারতের তৎকালীন গভর্নর জেনারেল লর্ড ওয়েলেসলির কাছে সতীদাহের বিরুদ্ধে ভাষণ পেশ করে।

১৮১২ সালে, ব্রাহ্মসমাজের প্রতিষ্ঠাতা রাজা রামমোহন রায় সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধ করার কারণকে সমর্থন করতে শুরু করেন। তিনি তার নিজের ভগ্নিপতিকে সতীদাহের মাধ্যমে মারা যেতে বাধ্য করার অভিজ্ঞতার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। তিনি কলকাতার শ্মশান পরিদর্শন করেন যাতে বিধবাদের অহংকারের বিরুদ্ধে রাজি করানো যায়, একই কাজ করার জন্য পরিদর্শন পর্ষদ গঠন করা হয়, অন্যান্য অভিজাত বাঙ্গালী শ্রেণীর সমর্থন চাওয়া হয় এবং হিন্দু ধর্মগ্রন্থের দ্বারা এটির প্রয়োজন হয় না তা দেখানোর জন্য নিবন্ধগুলি লিখে ও প্রচার করে। তিনি হিন্দু গোষ্ঠীগুলির সাথে দ্বন্দ্বে ছিলেন যারা সরকারকে ধর্মীয় অনুশীলনে হস্তক্ষেপ করতে চায় না।

১৮১৫ থেকে ১৮১৮ পর্যন্ত সতীদাহের মৃত্যু দ্বিগুণ হয়েছে। রামমোহন রায় সতীদাহের উপর আক্রমণ শুরু করেছিলেন যা "এমন ক্রোধ জাগিয়েছিল যে কিছুক্ষণের জন্য তার জীবন বিপদে পড়েছিল"। ১৮২১ সালে তিনি সতীদাহের বিরোধিতা করে গবেষণামূলক পুস্তিকা প্রকাশ করেন এবং ১৮২৩ সালে কেরির নেতৃত্বে শ্রীরামপুর ধর্মপ্রচারকরা তাদের আগের প্রবন্ধগুলি সম্বলিত গ্রন্থ প্রকাশ করেন, যার মধ্যে প্রথম তিনটি অধ্যায় সতীদাহ প্রথার বিরোধিতা করে। আরেকজন খ্রিস্টান ধর্মপ্রচারক ১৯২৭ সালে সতীদাহের বিরুদ্ধে গবেষণামূলক পুস্তিকা প্রকাশ করেন।

রাম মোহনের অবদান আজ গোটা দেশেই নারীদের জন্য এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে , বর্তমান রাজনীতি রামের জনপ্রিয়তা অনেকেই বলছেন সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক হতো যদি রাজা রাম  মোহন রায়ের জনপ্রিয়তা সেভাবে বৃদ্ধি হতো তবেই হয়তো তার কাজের সার্থকতা খুঁজে পেট দেশ।  আজ ও ধর্মের আড়ালে নারীদের উপর নেমে আসছে আক্রমন তাই রাজা রাম  মোহন রায়ের জন্মদিবসে প্রাসঙ্গিক হয়েই গোটা দেশে লাইটহাউসের কাজ করে যাবে এমনি অভিমত দেশে বহু যুক্তিবাদী মানুষদের।  





Top Post Ad

Below Post Ad

Hollywood Movies