চেন্নাই, ১২ জুন, ২০২৪— মঙ্গলবার রাতে এমজিআর চেন্নাই সেন্ট্রাল স্টেশনে হাওড়াগামী ট্রেনে টিকিটবিহীন এবং অননুমোদিত ব্যক্তিরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, সংরক্ষিত আসন দখল করে এবং বৈধ যাত্রীদের ট্রেনে উঠতে বাধা দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ট্রেনটি প্ল্যাটফর্মে আসার সাথে সাথেই অননুমোদিত ব্যক্তিরা সংরক্ষিত কামরায় প্রবেশ করে এবং ট্রেনটি থামার আগেই অনেক স্লিপার ক্লাস কোচ ভরে যায়। এতে করে অনেক বৈধ টিকিটধারী যাত্রী প্ল্যাটফর্মে আটকে পড়ে, তারা ট্রেনে উঠতে পারেনি।
"আমরা আগে থেকেই এসে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলাম, কিন্তু ট্রেনটি আসার সাথে সাথেই অনেক অননুমোদিত ব্যক্তি কোচে উঠে পড়ে। ট্রেনটি থামার আগেই স্লিপার ক্লাস কোচগুলো পূর্ণ হয়ে যায়," বলেন হাওড়ার যাত্রী বিনয় যাদব।
প্ল্যাটফর্মে ট্রাভেলিং টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) এবং অন্যান্য রেল কর্মচারী উপস্থিত থাকলেও তারা আটকে পড়া যাত্রীদের সাহায্য করতে পারেনি। "আমাদের দু'জন আত্মীয় জরুরি পরিস্থিতিতে ভিড় ঠেলে ট্রেনে উঠতে বাধ্য হয়েছে। আমরা তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। রেল কর্তৃপক্ষকে অবৈধ ব্যক্তিদের সরিয়ে বৈধ যাত্রীদের বসানোর ব্যবস্থা করা উচিত ছিল," যোগ করেন যাদব।
বিকল্প টিকিট বা থাকার জায়গা ছাড়া যাদব এবং তার পরিবার স্টেশনে আটকে পড়ে। "আমি জানি না রেল কর্তৃপক্ষ আমাদের টাকা ফেরত দেবে কিনা। আমরা হয়রানি এবং মানসিক যন্ত্রণার শিকার হয়েছি। আমাদের মতো অনেক যাত্রী আজ ট্রেন মিস করেছে," তিনি জানান।
অননুমোদিত যাত্রীরা শুধু সংরক্ষিত আসন দখল করেনি, বরং তাদের লাগেজ দিয়ে হাঁটার পথও বন্ধ করে দেয়, বৈধ যাত্রীদের ট্রেনে উঠতে বাধা দেয়। "ডজন ডজন লোক দরজার কাছে দাঁড়িয়ে ছিল, বৈধ টিকিটধারী যাত্রীদের উঠতে বাধা দেয়। এই ধরনের ঘটনা উত্তর ভারতে সাধারণ, এবং সম্প্রতি আমরা দক্ষিণ রেলেও এই ধরনের ঘটনা দেখতে পাচ্ছি," যাদব উল্লেখ করেন।
স্টেশনের রেল কর্মীরা স্বীকার করেছেন যে ট্রেন থামিয়ে প্রতিটি যাত্রীর টিকিট পরীক্ষা করা কঠিন। "যেসব যাত্রী টিকিট ছাড়া বা ওয়েটলিস্টেড/অনরিজার্ভড টিকিট নিয়ে ভ্রমণ করছেন, তাদের পুলিশ সহযোগিতায় টিটিই সরিয়ে দেবে," বলেন এক রেল কর্মকর্তা।
তাৎক্ষণিক সমাধানের অভাবে কিছু যাত্রী বিজয়ওয়াড়া এবং বিশাখাপত্তনম যাওয়ার বাস খুঁজে বের করার সিদ্ধান্ত নেয়, সেখান থেকে আরও ট্রেন পেয়ে হাওড়া পৌঁছানোর আশা নিয়ে। দক্ষিণ রেলের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, সংরক্ষিত কোচে অবৈধ ব্যক্তিদের প্রবেশ রোধে সমস্ত প্ল্যাটফর্মে রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স (আরপিএফ) এবং সরকারি রেল পুলিশ (জিআরপি) মোতায়েন করা হয়েছে। "এখনও পর্যন্ত কোনো যাত্রী থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। কেউ যদি সমস্যার কথা জানাতেন, আরপিএফ কর্মীরা অবশ্যই তাদের ট্রেনে উঠতে সাহায্য করত," মুখপাত্র বলেন।
এই ঘটনাটি বৈধ যাত্রীদের নির্বিঘ্নে যাত্রা নিশ্চিত করার জন্য কঠোর প্রয়োগ এবং ভাল ভিড় ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।
