এবার হাথরাসে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদপিষ্টের ঘটনায় বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যা আবারো উত্তরপ্রদেশের আইন শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। মনে করিয়ে দেয়, এই অঞ্চলেই আগে এক তরুণীর নৃশংস হত্যার ঘটনা গোটা দেশকে এক সূত্রে গেঁথেছিল প্রতিবাদে।
হাথরসে 'ভোলে বাবা' নামে পরিচিত ধর্ম প্রচারক বাবা নারায়ণ বিশ্ব হরি একটি সৎসঙ্গ সভার আয়োজন করেছিলেন। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে আগাম অনুমতি নিয়ে জানানো হয়েছিল যে সভায় প্রায় ৮০,০০০ লোকের জমায়েত হবে। কিন্তু বাস্তবে প্রায় ২ লক্ষ মানুষের জমায়েত হয়। সভায় ঢোকার গেট থাকলেও বেরোনোর কোনো আলাদা গেট করা হয়নি, যা পরিস্থিতি আরো খারাপ করে তোলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভোলে বাবা বা সুরজ পাল, কাসগঞ্জ জেলার পাটিয়ালি এলাকার বাহাদুর নাগরী গ্রামের বাসিন্দা। প্রায় দুই দশক আগে রাজ্য পুলিশে চাকরি ছেড়ে প্রচারক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন এবং ঐশ্বরিক শক্তি পাওয়ার দাবি করেন। তিনি বিভিন্ন স্থানে শাখা গড়ে তোলেন এবং নিজের নাম ভোলে বাবা ঘোষণা করেন। উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন স্থানে তিনি বৃহৎ সমাবেশ সংগঠিত করেন। ঘটনার এক সপ্তাহ আগে মাইনপুরী এলাকায় একই রকম সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কোভিডের সময়ে, সরকারের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও তিনি প্রায় ৫০ হাজার মানুষের জমায়েত করেছিলেন, যা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল। রাজনৈতিক মহলে তাঁর প্রভাব এতটাই যে, নিয়ম ভাঙার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে কোনো পুলিশ কেস রুজু হয়নি।
ঘটনার পর থেকে ভোলে বাবা পলাতক। সমাজবাদী পার্টির অভিযোগ, পুলিশ সব জানার পরেও তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না, সম্ভবত তিনি শাসক দলের ঘনিষ্ঠ।
পদপিষ্টের ঘটনায় এখন পর্যন্ত প্রায় ১৩৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে, যার মধ্যে অধিকাংশ মহিলা ও শিশু। সিকান্দরাউ এলাকার ফুলরাই গ্রামের কাছে এই সৎসঙ্গ সভার আয়োজন হয়েছিল। আজ সকালে যোগী আদিত্যনাথ ঘটনাস্থলে পৌঁছাবেন, যদিও প্রশাসনের ব্যর্থতা নিয়ে মুখ খোলেননি। তিনি বলেছেন, দেখতে হবে ঘটনা কোনো ষড়যন্ত্র কিনা এবং উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
সমাজবাদী পার্টির পক্ষ থেকে অখিলেশ যাদব বলেন, পুলিশের ব্যর্থতার জন্য সরকারকেই জবাব দিতে হবে। তিনি পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন এবং মৃতদের পরিবারের সদস্যদের আর্থিক ক্ষতিপূরণের দাবি করেছেন।