আর জি কর হাসপাতালে ধর্ষণ ও খুনের ষড়যন্ত্রে তিনজন জড়িত থাকতে পারেন, এমন সন্দেহ করছে সিবিআই। যদিও এই তিনজনের সরাসরি ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি, তবে ঘটনাটির তথ্য চাপা দেওয়া, মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে বাঁচানোর চেষ্টা এবং প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ তুলে ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব সামনে আনছে তদন্তকারী সংস্থা।
সিবিআইয়ের সন্দেহ, এই ষড়যন্ত্রে রয়েছেন আর জি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং কলকাতা পুলিশের এএসআই অনুপ দত্ত। এছাড়াও নির্যাতিতার পরিচিত একজন চিকিৎসকও প্রমাণ লোপাটের সম্ভাবনার দিক থেকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার রাডারে রয়েছেন।
বুধবার সিবিআই দ্বাদশতম দিনে সন্দীপ ঘোষকে ফের তলব করে এবং সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে নিজেদের দপ্তরে রাত পর্যন্ত তাঁকে জেরা করে। একইসঙ্গে এদিন এএসআই অনুপ দত্তকে লাই ডিটেক্টর যন্ত্রের সামনে বসানো হয়। নির্যাতিতার পরিচিত আরও দুই চিকিৎসককেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, যাঁদের মধ্যে একজনকে রাত পর্যন্ত জেরা করা হয়।
সিবিআইয়ের দাবি, ঘটনার মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায় নারকীয় ঘটনাটি ঘটানোর পরই চতুর্থ ব্যাটালিয়নে ফিরে গিয়ে কারও পরামর্শেই নিজের পরনের জামাকাপড় ও জুতো ধুয়ে ফেলেছিল। তার ‘গুরু’ অনুপ দত্তের পরামর্শেই এই কাজ সে করেছিল, এমন সম্ভাবনাও সিবিআই উড়িয়ে দিচ্ছে না।
তদন্তকারী সংস্থা বলছে, এএসআই নিজে একজন পুলিশ আধিকারিক হয়েও লালবাজারকে কিছু না জানিয়ে সঞ্জয়কে 'বাঁচানো'র চেষ্টা করেছেন। এই অভিযোগ নিশ্চিত করতেই অনুপের পলিগ্রাফ পরীক্ষা করানো হয়েছে।
সন্দীপ ঘোষকে সিবিআইয়ের প্রশ্ন, কেন তিনি প্রথম থেকেই এই ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে প্রচারের চেষ্টা করছিলেন? তিনি খবর পাওয়ার পর নিজের লোক পাঠিয়ে ঘটনাস্থলের আবহাওয়া বোঝার চেষ্টা করেন এবং ছবিও দেখেন। কিন্তু পুলিশকে সঙ্গে সঙ্গে খবর না দিয়ে প্রায় ৪০ মিনিট পরে সন্দীপের নির্দেশে পুলিশকে জানানো হয়। তারপর শুরু হয় কর্ডন দেওয়ার কাজ।
সিবিআই এই সমস্ত তথ্য যাচাই করছে এবং নির্যাতিতার পরিচিত চিকিৎসক তথ্য ও প্রমাণ লোপাটের ক্ষেত্রে কোনো বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন কি না, সেই বিষয়েও তাঁকে জেরা করছে বলে জানিয়েছে।