কলকাতায় ডার্বি ম্যাচ বাতিলের প্রতিবাদে গোটা বাংলায় ক্রীড়াপ্রেমীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। দুর্গাপুরের ইস্পাত অঞ্চলেও এই ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে আজ বড়সড় বিক্ষোভের সাক্ষী হয়েছে স্থানীয় মানুষ। "জাস্টিস ফর আরজিকর নির্যাতিতা" দাবির পটভূমিতে গোটা বাংলা একত্রিত হয়েছে এবং এই আন্দোলনের অংশ হিসেবেই ডার্বি ম্যাচে বিক্ষোভ হওয়ার কথা ছিল। তবে ম্যাচটি হঠাৎ বাতিল করার সিদ্ধান্তে প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় এই ম্যাচটি বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু অনেকেই মনে করছেন, নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে চলমান আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করার জন্যই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ক্রীড়াপ্রেমী মহল মনে করছে, এই সিদ্ধান্ত আন্দোলন দমনের কৌশলেরই একটি অংশ।
আজ সল্টলেক স্টেডিয়ামে তিনটি দলের সমর্থকরা উপস্থিত হন এবং সেখানে পুলিশ-জনতার মধ্যে খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয়। ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান ও মহামেডান সমর্থকদের মধ্যে অনেককেই গ্রেপ্তার করা হয়। পরে, বিক্ষোভকারীদের চাপের মুখে পুলিশ তাদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। তবে, লাঠিচার্জে বেশ কয়েকজন সমর্থক আহত হন।
দুর্গাপুর ইস্পাত অঞ্চলেও এই পরিস্থিতি নিয়ে উত্তেজনা ছিল। গতকাল থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার চলছিল, যা culminate হয় নেহেরু স্টেডিয়ামে বিশাল মিছিলের মাধ্যমে। মিছিলে ক্রীড়াবিদ, স্থানীয় মানুষ এবং রাজনীতির বাইরের অনেকেই অংশ নেন। জাতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন খেলোয়াড়রাও মিছিলে পা মিলিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। মিছিলটি নেহেরু স্টেডিয়াম থেকে শুরু হয়ে এএসপি স্টেডিয়ামে পৌঁছায়, যেখানে বক্তারা সরকারের আন্দোলন দমন নীতির তীব্র সমালোচনা করেন।
বক্তারা উল্লেখ করেন, খেলার ময়দানে যেভাবে রাজনীতি প্রবেশ করেছে এবং মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকে ব্যবহার করে বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা করছেন, তা ক্রীড়াপ্রেমীদের জন্য অত্যন্ত লজ্জার। তারা এই দিনটিকে বাংলার খেলার ইতিহাসে একটি "কালো দিন" হিসেবে অভিহিত করেছেন। প্রতিবাদকারীরা ঘোষণা করেছেন যে তারা রাস্তায় থেকেই নির্যাতিতার বিচার দাবি করবেন এবং তাদের আন্দোলন কোন রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত নয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, যেভাবে সরকারবিরোধী আন্দোলন মাথাচাড়া দিচ্ছে, তাতে বর্তমান সরকারের জন্য পরিস্থিতি সুখকর হবে না। পুলিশি নির্যাতন ও দমন নীতির কারণে এই আন্দোলন আরও তীব্র হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।আজকের বিক্ষোভে বক্তব্য রাখেন মোহনবাগান ক্লাবের সদস্য পার্থ সারথি চ্যাটার্জি, ইস্টবেঙ্গল ক্লাব সমর্থকদের পক্ষ বক্তব্য রাখেন চন্দন ভৌমিক।এছাড়াও বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এথলটিক কোচ মেঘনাদ অদ্য, সলিল গাঙ্গুলি,ইস্টবেঙ্গল ফ্যান ক্লাবের পক্ষ থেকে অনির্বান ভট্টাচার্য্য, এছাড়াও বক্তব্য রাখেন শেফালী মন্ডল,বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক সুখময় বোস,প্রাক্তন বিধায়ক সন্তোষ দেবরায়,শ্রমিক নেতা বিমল মোহন ত্রিপাঠি।এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বক্সার ঘনস্যাম সোনার,নাজির খান,তিমির প্রামানিক,তারক সিং,এছাড়াও একাধিক ক্রীড়াবিদ।