গতকাল তিলোত্তমার বিচারের দাবিতে মিছিল আক্রান্ত হয় এছাড়াও দুর্গাপুরের ঐতিহ্যশালী বিমল দাস গুপ্ত স্মৃতি ভবনে একাধিক গাড়ি ভাঙচুর ও বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার পর গোটা দুর্গাপুর বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। যেখানে রাজ্যের প্রতিটি জেলায় প্রতিদিন তিলোত্তমার বিচারের দাবিতে মিছিল সংগঠিত হচ্ছে, সেখানে দুর্গাপুরের মিছিলকে আক্রমণ করে কার স্বার্থ সুরক্ষিত রাখা হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দুর্গাপুরের বুদ্ধিজীবী মহল।
এই আক্রমণের প্রতিবাদে আজ দুর্গাপুরজুড়ে ছিল ধিক্কার মিছিল। গোটা শহর এক হয়ে গেছে, যেন একসূত্রে গাঁথা। মিছিলে যাতে কোনো অশান্তি না হয়, সেই কারণে সকাল থেকেই পুলিশের কড়া নজরদারি ছিল। গতকাল যে মিছিলের রুট ঠিক করা হয়েছিল, আজও সেই রুটেই মিছিল করার পরিকল্পনা করেন নেতৃত্ববৃন্দ। সিধু কানু ইনডোর স্টেডিয়ামের সামনে জমায়াতের ডাক দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু সেই রাস্তা পুলিশ ব্যারিকেড করে বন্ধ করে দেয়।
পুলিশ প্রশাসনের বক্তব্য, এই রুট দিয়ে মিছিল করলে এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হতে পারে। একপ্রস্থ আলোচনার পর মিছিলটি সোজা জিটি রোড দিয়ে সিটি সেন্টার পেট্রোল পাম্পের সামনে গিয়ে শেষ হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। সেই অনুযায়ী মিছিল শুরু হয়, যার নেতৃত্ব দেন ধ্রুবজ্যোতি কোষ এবং মীনাক্ষী মুখার্জি। পুলিশের হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ৫ হাজার মানুষ এই মিছিলে অংশগ্রহণ করে। মিছিলটি যখন সিটি সেন্টারের পেট্রল পাম্পের সামনে পৌঁছায়, তখনও তার শেষভাগ রাস্তার অন্য প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকে।
জাতীয় সড়কের উপর কয়েক ঘণ্টা মিছিলের অবস্থানের পর একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিপিআইএমের জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চ্যাটার্জী, ডি ওয়াই এফ আই সভানেত্রী মীনাক্ষী মুখার্জী এবং সিআইটিইউ রাজ্য সম্পাদক অনাদি সাহু সহ অন্যান্য বাম নেতারা বক্তব্য রাখেন। বক্তারা তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কড়া সমালোচনা করেন এবং দাবি করেন যে তিলোত্তমার বিচারের জন্য সংগঠিত মিছিলে আক্রমণ করে আসল অপরাধীদের আড়াল করা হচ্ছে।
পুলিশ প্রশাসন মিছিলের শৃঙ্খলা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করলেও মিছিলের অংশগ্রহণকারীরা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল সম্পন্ন করে, যা দুর্গাপুরে এক অনন্য নজির সৃষ্টি করে। বক্তারা ঘোষণা করেন, তিলোত্তমার বিচারের দাবিতে আন্দোলন স্তব্ধ হবে না, বরং প্রতিনিয়ত রাজপথ দখল করে রাখবে। ভবিষ্যতেও দুর্গাপুরের বুকে আরও বড় মিছিল সংঘটিত হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা।
আজকের মিছিলের মেজাজ প্রমাণ করে, অবিলম্বে তিলোত্তমার বিচার সংঘটিত না হলে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে, দুর্গাপুরের রাজপথ দখলে রাখবে আন্দোলনকারীরা। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এই মিছিল ভবিষ্যতের রাজনৈতিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করছে।