সুইডেনে বসবাসরত এক ভারতীয় ব্যক্তি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরেছেন কেন অনেক ভারতীয় সুইডেন থেকে তাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। ইউরোপের পঞ্চম বৃহত্তম দেশ সুইডেন ভারতীয়দের স্থায়ী হওয়ার অন্যতম শীর্ষ গন্তব্য হলেও, অঙ্কুর ত্যাগী নামে এক ব্যক্তি তার অভিমত প্রকাশ করে জানিয়েছেন যে, “চমৎকার প্রাকৃতিক দৃশ্য, অনন্য সংস্কৃতি এবং নতুন অভিজ্ঞতা” থাকা সত্ত্বেও অনেক ভারতীয় নিজ দেশে ফিরে যেতে চান।
অঙ্কুর তার পর্যবেক্ষণে বেশ কয়েকটি কারণ তুলে ধরেন, যা তিনি মনে করেন এই প্রবণতার পেছনের সম্ভাব্য কারণ হতে পারে। তার মতে, “ভারতে পেশাগত উন্নতি” একটি বড় কারণ। তিনি ব্যাখ্যা করেন, “ভারতের অর্থনীতি দ্রুত উন্নয়ন করছে, ফলে দক্ষ পেশাজীবীদের জন্য প্রতিযোগিতামূলক বেতন এবং উত্তেজনাপূর্ণ ক্যারিয়ারের সুযোগ তৈরি হচ্ছে, যা দেশে ফিরে যাওয়ার আকর্ষণ বাড়াচ্ছে।”
অঙ্কুর "একাকীত্ব এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের অভাব"কে আরেকটি কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “পশ্চিমা দেশে বসবাসের ফলে একাকীত্বের অনুভূতি তৈরি হয়, বিশেষ করে সাংস্কৃতিক পার্থক্য বা ভাষাগত সমস্যা থাকার কারণে গভীর সম্পর্ক গড়ে তোলা কঠিন হয়ে পড়ে। অনেক ভারতীয় তাদের ভারতে থাকা শক্তিশালী সামাজিক বন্ধন এবং সম্প্রদায়জীবন মিস করেন, যা সুইডেনে পুনরায় তৈরি করা কঠিন। এই বিচ্ছিন্নতার অনুভূতি ভারতে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে পারে, যেখানে তারা পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে পুনরায় সংযোগ স্থাপন করতে পারেন।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, সুইডেনে যথাযথ যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও অনেকের সঙ্গী চাকরি খুঁজে পেতে সমস্যায় পড়েন, কারণ সুইডিশ ভাষায় তাদের দক্ষতা নেই।
অঙ্কুর আরও বলেন যে, অনেক ভারতীয় তাদের বৃদ্ধ বাবা-মায়ের যত্ন নিতে এবং পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে দেশে ফিরতে চান। কিছু ভারতীয় ভালো আর্থিক সুযোগ খুঁজতে সুইডেন ছেড়ে দেশে ফেরেন। তার মতে, “পরিবারের সঙ্গে থাকা সামগ্রিক সুখ বাড়ায়, বিশেষ করে শিশুদের জন্য, যারা দাদু-দিদা বা নানু-নানির সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে।”
অঙ্কুর শেষ পর্যন্ত "সামাজিক অন্তর্ভুক্তি"র চ্যালেঞ্জকেও একটি কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “কিছু ভারতীয় সাংস্কৃতিক পার্থক্য এবং ভাষাগত সমস্যার কারণে সুইডিশ সমাজে পুরোপুরি অন্তর্ভুক্ত হতে সমস্যার মুখোমুখি হন, যা তাদের ভারতে ফিরে যেতে উৎসাহিত করে।”
