কলকাতা, ১০ আগস্ট: বাংলায় আবারও নৃশংসতার নজির সৃষ্টি হলো। এবার এক চিকিৎসকের হত্যার ঘটনা গোটা রাজ্যকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। গতকাল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রয়াণ দিবসে যেখানে রাজ্যজুড়ে শোকের ছায়া ছিল, সেই সময়েই আরজিকর হাসপাতালে ৩৬ ঘণ্টার টানা ডিউটি শেষে এক চিকিৎসককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। দীর্ঘক্ষণ তার দেহ হাসপাতালের চত্বরে পড়ে ছিল, পরে পুলিশ এসে সেমিনার হল থেকে দেহটি উদ্ধার করে।
পোস্টমর্টেম রিপোর্টে এই হত্যার নির্মমতা স্পষ্ট হয়, যা চিকিৎসক মহলে প্রবল ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। সহকর্মীরা এর প্রতিবাদে পথে নেমে বাম নেত্রী মীনাক্ষী মুখার্জি সহ একাধিক বাম কর্মী বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। পুলিশের চেষ্টা সত্ত্বেও বিক্ষোভ থামানো যায়নি, এবং শেষপর্যন্ত তারা চিকিৎসকের দেহ নিয়ে যায়।
রাতভর তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদের পর হাসপাতালের এক অস্থায়ী নিরাপত্তা কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিরোধীরা দাবি করছে, এই নৃশংসতায় একাধিক ব্যক্তির হাত থাকতে পারে এবং এর সাথে জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানানো হয়েছে।
আর জি কর হাসপাতাল চত্বরের সামনে থেকে সিপিআইএম এবং ছাত্র সংগঠনের বিক্ষোভ মিছিল পুলিশের হস্তক্ষেপে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কেন প্রশাসন এই আন্দোলনকে দমানোর চেষ্টা করছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন যে অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে এবং প্রয়োজন হলে বাইরের কোনো সংস্থার দ্বারা তদন্ত করা হবে।
বিকেলের দিকে বামেদের প্রতিবাদ দমাতে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর আক্রমণ চালায়। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, "কলকাতা এখন 'সিটি অফ ভয়' হয়ে গেছে। ডাক্তারদের নিরাপত্তা তলানীতে, এবং হাসপাতাল অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে।" তিনি সরকারকে হুঁশিয়ারি দেন যে, ব্যবস্থা না নিলে রাস্তা দখল করেই প্রতিবাদ চলবে।
এই হত্যার প্রতিবাদে আজ গোটা রাজ্য জুড়ে বাম দলগুলি বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে, যা আরও তীব্র হতে পারে বলে রাজনৈতিক মহল আশঙ্কা করছে।