কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার সরকারি হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসা পরিষেবা কার্যত বন্ধ হয়ে পড়েছে। রাজ্যের জুনিয়র ডাক্তাররা সাম্প্রতিক ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে কর্মবিরতি পালন করছেন, যার ফলে শুধুমাত্র জরুরিকালীন পরিষেবা ছাড়া বাকি সব চিকিৎসা কার্যক্রম প্রায় থমকে গেছে।
জানা গেছে, রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালগুলোতে রোগীরা চিকিৎসা না পেয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। আউটডোর এবং অন্যান্য বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এমনকি, যারা দীর্ঘ সময় ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তারাও কোনো পরিষেবা না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। পরিস্থিতি কার্যত বনধের মতো হয়ে উঠেছে, কারণ চিকিৎসা পরিষেবার অভাবে রোগীদের স্বাভাবিক চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না।
এই কর্মবিরতির মূল কারণ হলো আরজিকর হাসপাতালে এক মহিলা জুনিয়র ডাক্তারকে নৃশংসভাবে ধর্ষণ করে হত্যা করার ঘটনা। এই নির্মম ঘটনার প্রতিবাদে এবং নিরাপত্তার দাবিতে জুনিয়র ডাক্তাররা একত্রিত হয়ে কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাদের দাবি, এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে এবং হাসপাতালগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়।
এই ঘটনায় পুরো রাজ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। চিকিৎসা পরিষেবার এই বিপর্যয়ে সরকারি মহলও উদ্বিগ্ন। স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে, জুনিয়র ডাক্তাররা তাদের দাবির বিষয়ে অটল রয়েছেন এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল।
রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার এমন বিপর্যস্ত অবস্থায় রোগী এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এর দ্রুত সমাধান না হলে পরিস্থিতি আরও গুরুতর হতে পারে, এমনটাই মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। সরকারের তরফ থেকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, তবে জুনিয়র ডাক্তারদের সুরক্ষার বিষয়ে কি পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা নিয়ে এখনও সংশয় রয়েছে।
রাজ্যজুড়ে চিকিৎসা পরিষেবার এই সংকটময় অবস্থায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সকলেই দ্রুত সমাধানের প্রত্যাশায় রয়েছে যাতে চিকিৎসা পরিষেবা স্বাভাবিক হতে পারে।