কোচবিহার জেলার কুচবিহার দুই নম্বর ব্লকের গোপালপুর গ্রামে গত ২২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাতটার দিকে একটি নৃশংস নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। গোপালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রী বিপ্লব বর্মন নামে এক দুষ্কৃতির দ্বারা নির্যাতিত হয়। বিপ্লব বর্মনের পিতা নিশাদু বর্মন, এবং তিনি এলাকার প্রভাবশালী তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত।
ঘটনার দিন, পাশের এক বাড়িতে দুর্গাপূজা উপলক্ষে নাচ-গানের রিহার্সেল চলছিল, এবং রিহার্সেল শেষে মেয়েটি বাড়ি ফেরার পথে বিপ্লব তাকে পাঁচ টাকার বিনিময়ে দোকান থেকে শ্যাম্পু আনার জন্য পাঠায়। শ্যাম্পু এনে দেওয়ার পর, বিপ্লব বর্মন মেয়েটিকে জোরপূর্বক ঘরের ভেতরে নিয়ে যায় এবং পাশবিক অত্যাচার চালানোর চেষ্টা করে। মেয়েটি প্রাণপণ প্রতিরোধ করলেও, বিপ্লব তাকে আঘাত করে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে কামড়ে রক্তাক্ত করে ফেলে।
মেয়েটি কোনোমতে বিপ্লবের কবল থেকে পালিয়ে এসে তার জ্যাঠামশাইয়ের বাড়িতে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরে তার জেঠিমার সহায়তায় মেয়েটি নির্যাতনের ঘটনাটি জানায়। এরপর মেয়েটিকে হাসপাতালে নেওয়া হলে পুলিশ কেস হিসেবে থানায় যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। পুন্ডিবাড়ি থানায় রাত ১১টায় ডায়েরি করা হলেও, প্রথমে মেয়েটির পরিবারকে ডায়েরির রিসিভ কপি দেওয়া হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দারা বিপ্লব বর্মনের রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে প্রথমে কিছু বলতে সাহস পাননি, তবে পরবর্তীতে সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির সহযোগিতায় পুলিশ ডায়েরির কপি দিতে বাধ্য হয়। গতকাল রাতে বিপ্লব বর্মনকে গ্রেফতার করে থানায় আনা হয় এবং আজ ২৪ সেপ্টেম্বর আদালতে তোলা হলে তাকে সাত দিনের জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
এই ঘটনার পর মেয়েটির পরিবার ভীতসন্ত্রস্ত, কারণ বিপ্লবের পিতার সঙ্গে এলাকার তৃণমূল নেতাদের আদালতের চত্বরে দেখা গেছে। মেয়েটিকে আদালতে নিয়ে গিয়ে তার গোপন জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে।