কলকাতা, গতকাল - প্রবল প্রাকৃতিক দুর্যোগকে উপেক্ষা করেও তিলোত্তমা বিচারের দাবিতে ধর্মতলায় অনুষ্ঠিত হলো বাম ছাত্র-যুব ও মহিলা সংগঠনের এক বৃহৎ সমাবেশ। গতকাল রাত থেকেই বৃষ্টিপাত চলতে থাকলেও সমাবেশের আয়োজন ও প্রস্তুতি কোনোভাবে ব্যাহত হয়নি। মধ্যরাত থেকেই সমাবেশের প্রস্তুতি শুরু হয়, যার মূল আকর্ষণ ছিল একটি মুখের অবয়ব, যার চোখ থেকে রক্ত ঝরছে, প্রতীকীভাবে তিলোত্তমার বিচারহীনতার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
সকাল থেকেই ধর্মতলা চত্বর শ্বেত পতাকায় ভরে যায়। বিভিন্ন জেলা থেকে বামপন্থী কর্মী-সমর্থকেরা আসেন এবং দুটি বৃহৎ মিছিল—একটি হাওড়া স্টেশন থেকে এবং অপরটি শিয়ালদা থেকে—ধর্মতলায় এসে মিলিত হয়। মিছিলের বিশালতা এমন ছিল যে, এক প্রান্ত প্রবেশ করতেই সমাবেশ শুরু হয়ে যায়, কিন্তু মিছিলের শেষ অংশ তখনও ধর্মতলায় প্রবেশ করেনি।
অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক প্রশ্ন তুলছেন, এত বড় সমাবেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে আগে কেউ দেখেছে কিনা। প্রবল বৃষ্টি ও বাতাসও সমাবেশের উত্তাল জনতাকে থামাতে পারেনি। মীনাক্ষী মুখার্জি ও একাধিক বাম নেতৃত্ব প্রবল বৃষ্টির মধ্যেই বক্তব্য রাখেন। তারা দীপ্ত কণ্ঠে ঘোষণা করেন, যতদিন না তিলোত্তমা বিচার পায়, ততদিন এই লড়াই চলবে। তাদের মতে, রাস্তাই হবে মানুষের দ্রোহের উৎসব এবং সেখানে থেকেই বিচার ছিনিয়ে আনা হবে।
পুলিশ প্রশাসন বিভিন্ন শর্ত আরোপ করলেও, তা ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে ধর্মতলা দখল করে ফেলে প্রতিবাদী জনতা। তারা জানায়, বিচার না পাওয়া পর্যন্ত রাস্তায় অবস্থান অব্যাহত থাকবে। গোটা রাজ্যে তিলোত্তমার বিচার নিয়ে যে গণ-আন্দোলন শুরু হয়েছে, তা ক্রমশই শক্তিশালী হচ্ছে এবং আজকের সমাবেশ তারই এক প্রমাণ।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এই সমাবেশ শুধুমাত্র প্রতিবাদের নয়, একটি ঐতিহাসিক আন্দোলনের দিক নির্দেশনা দিচ্ছে। বাম ছাত্র-যুব-মহিলা সংগঠনের এই সমাবেশ প্রবল বৃষ্টি ও প্রতিকূলতার মাঝেও লড়াইয়ের মেজাজে নতুন মাত্রা যোগ করেছে, যা ভবিষ্যতে আন্দোলনকে আরও তীব্র করবে।