কোচবিহারের এমজেএন মেডিক্যাল কলেজে থ্রেট কালচারের অভিযোগ উঠেছে, যার জেরে ২০২৩ সালে এক ডাক্তারি ছাত্রী হস্টেলের ঘরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন। যদিও এই ঘটনা ২০২৩ সালের জুন মাসে ঘটেছিল, সাম্প্রতিক আরজি কর কাণ্ডের প্রেক্ষিতে থ্রেট কালচারের অভিযোগ আবারও সামনে এসেছে।
মৃত ছাত্রীর পরিবার র্যাগিংয়ের অভিযোগ তোলে এবং জানায়, ছাত্রীটি পূর্ব বর্ধমানের ইছলাবাদ থেকে কোচবিহারে পড়তে গিয়েছিলেন। হস্টেলে ‘ইনট্রো’ দেওয়ার নামে তাকে নিয়মিত মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়। এমনকি ময়নাতদন্তের পর দেহ দাহ করার সময়েও সিনিয়র ছাত্ররা তাকে ঘিরে রেখেছিল বলে দাবি করেন পরিবারের সদস্যরা।
ছাত্রীর বাবা অভিযোগ করেন, কলেজের পরিবেশ অত্যন্ত খারাপ এবং তার মেয়ে একাধিকবার কলেজের পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছিল। তিনি জানান, “কলেজের পরিস্থিতি একদমই ভালো নয়, হস্টেলে পড়াশোনা করা অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। ইনট্রো দেওয়ার নামে মানসিক অত্যাচার চলত।”
কলেজ সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন এক সিনিয়র ছাত্রের সঙ্গে তার ঝগড়া হয়েছিল। ওই ছাত্র থ্রেট কালচারের অন্যতম সদস্য বলে জানা গিয়েছে। এছাড়া, ঘটনার আগে কলেজের টিএমসিপি ছাত্রনেতার সঙ্গে তার মেসেজ আদানপ্রদান হয়েছিল, তবে অভিযোগ রয়েছে, ঘটনার পর অন্য এক ছাত্রনেতা সেই চ্যাট ডিলিট করে দেন।
কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ নির্মলকুমার মণ্ডল জানান, ফার্স্ট ইয়ারের ছাত্রছাত্রীদের আলাদা রাখার ব্যবস্থা করা হলেও তা নিয়ে কলেজে অসন্তোষ ছিল। ছাত্রীটির বাবা বিষয়টি তাকে জানালে তিনি আরও দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারতেন।
চিকিৎসক সংগঠনের নেতা উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই থ্রেট কালচার বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের উপর প্রভাব ফেলেছে। তিলোত্তমা ঘটনার মতোই এটি একটি গুরুতর ঘটনা, যা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিবেশকে ভয়ঙ্করভাবে প্রভাবিত করেছে।”
এই ঘটনায় মৃত ছাত্রীর পরিবার ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়েছে এবং দোষীদের কঠোর শাস্তির আহ্বান করেছে।