গতকাল রাতে কুলতলী জয়নগরে এক নির্মম ঘটনা ঘটেছে। টিউশন থেকে ফেরার পথে এক কিশোরীর সম্ভ্রমহানি ও নৃশংসভাবে খুন করা হয়। পরদিন সকালে তার ক্ষতবিক্ষত দেহ পুকুরপাড়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরিবারের সদস্যরা এই মর্মান্তিক দৃশ্য দেখতে পেয়ে তীব্র বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। এই ঘটনার পর রাজ্যে নারীর নিরাপত্তা নিয়ে আবারও প্রশ্ন উঠেছে, বিশেষ করে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার কারণে স্থানীয়দের ক্ষোভ চরমে পৌঁছেছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, মেয়েটি নিখোঁজ হওয়ার পরও পুলিশ যথাযথ পদক্ষেপ নেয়নি। থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে তাদের এক থানার থেকে অন্য থানায় ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। এই কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে এলাকাবাসী থানা ভাঙচুর ও আগুন লাগানোর মতো ঘটনা ঘটায়। বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়।
এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ বাম ছাত্র যুব সংগঠনগুলির নেতৃত্বে জয়নগর থানার সামনে বিশাল জনসমাবেশ এবং ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হয়। মীনাক্ষী মুখার্জির নেতৃত্বে আন্দোলন আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। তিনি সরাসরি পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা করে বলেন, "নারী নির্যাতনকে ধর্মীয় মেরুকরণ দিয়ে ঢাকতে দেওয়া হবে না। রাজ্যে নারী নিরাপত্তা শূন্যের কোঠায় পৌঁছেছে, আর মুখ্যমন্ত্রী এই দায় থেকে রেহাই পেতে পারেন না।"
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনা বিরোধীশূন্য কুলতলী ও জয়নগর এলাকাগুলিতে এক নতুন বিদ্রোহের জন্ম দিয়েছে। স্থানীয় মানুষ ও বিরোধী কণ্ঠস্বর একত্রিত হয়ে রাস্তায় নেমেছে। বাম ছাত্র ও যুব সংগঠনগুলির আহ্বানে ব্যাপক জনসমাবেশ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মীনাক্ষী মুখার্জি দাবি করেন, "বিচারের লড়াই রাস্তায় হবে, এবং এই আন্দোলন অন্যরকম রূপ নেবে।"
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এই ঘটনার পর শাসক দলের ওপর প্রবল চাপ তৈরি হচ্ছে। ঠিক যেমন আরজিকর ঘটনার পর শহর রাস্তায় নেমেছিল, তেমনভাবেই এবার গ্রামের মানুষ প্রতিবাদে পথে নেমেছে।