ফিলিপাইনে প্রবল বন্যা ও ভূমিধসে টাইফুন ট্রামির তাণ্ডবে মৃত ও নিখোঁজ ব্যক্তির সংখ্যা প্রায় ১৩০-এ পৌঁছেছে। শনিবার দেশটির প্রেসিডেন্ট জানান, অনেক এলাকা এখনও বিচ্ছিন্ন রয়েছে এবং সেখানকার মানুষের সাহায্য প্রয়োজন।
শুক্রবার উত্তর-পশ্চিম ফিলিপাইন থেকে সরে যাওয়ার পর ট্রামি অন্তত ৮৫ জনের মৃত্যু ঘটিয়েছে এবং আরও ৪১ জন নিখোঁজ রয়েছে। সরকারী দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া সংস্থা জানিয়েছে, এ বছর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপপুঞ্জে এটি অন্যতম প্রাণঘাতী ও ধ্বংসাত্মক ঝড়। এখনও পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন এলাকা থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
শনিবার বাতাঙ্গাস প্রদেশের তালিসায় শহরে পুলিশ, ফায়ার ফাইটার ও অন্যান্য জরুরি কর্মীরা তিনটি ব্যাকহো ও স্নিফার কুকুরের সাহায্যে দুই নিখোঁজ ব্যক্তির মধ্যে এক জনের দেহ উদ্ধার করেছে। শহরের কেন্দ্রে একটি বাস্কেটবল জিমে প্রায় এক ডজন সাদা কফিনে খুঁজে পাওয়া মৃতদেহ রাখা হয়েছে, যেগুলো বৃহস্পতিবার বিকেলে তালিসাইয়ের সাম্পালোক গ্রামে গাছপালা ও কাদামাটির স্রোতে চাপা পড়ে ছিল।
শনিবার ম্যানিলার দক্ষিণ-পূর্বে আরেকটি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল পরিদর্শনকালে প্রেসিডেন্ট ফের্দিনান্দ মার্কোস বলেন, ঝড়টি যে পরিমাণ বৃষ্টি বর্ষণ করেছে, তা বিভিন্ন অঞ্চলের বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে অপ্রস্তুত করে ফেলে। কিছু এলাকায় মাত্র ২৪ ঘণ্টায় এক থেকে দুই মাসের সমপরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। ঝড়ের পথে পাঁচ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ ছিল, যার মধ্যে প্রায় পাঁচ লাখ লোক ৬,৩০০টিরও বেশি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছিল।
এক জরুরি ক্যাবিনেট বৈঠকে প্রেসিডেন্ট মার্কোস জানান, আবহাওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী এটি দক্ষিণ চীন সাগরের উচ্চ চাপের বাতাস দ্বারা পেছনে ধাক্কা খেয়ে আবারও ফিরতে পারে।
ঝড়টি গতিপথ পরিবর্তন না করলে সাপ্তাহিক ছুটিতে ভিয়েতনামে আঘাত হানতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জননিরাপত্তার স্বার্থে শুক্রবার টানা তৃতীয় দিনের মতো স্কুল ও সরকারি অফিস বন্ধ ঘোষণা করা হয়। প্রধান দ্বীপ লুজোনে আন্তঃদ্বীপ ফেরি পরিষেবাও স্থগিত করা হয়, ফলে হাজার হাজার মানুষ আটকা পড়ে। শনিবার অনেক এলাকায় আবহাওয়া পরিষ্কার হওয়ায় পরিষ্কার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।