উমা আসছেন পিতৃগৃহে, পিতৃপক্ষের অবসান ঘটিয়ে শুরু হয়েছে দেবীপক্ষ। চারিদিকে উৎসবের আমেজ থাকলেও, এবারের উৎসব যেন প্রতিবাদের রূপ নিয়েছে। তিলোত্তমার নৃশংস হত্যাকাণ্ড নিয়ে সাধারণ মানুষ এখনও শোকাহত, আর তাই মহালয়ার দিনও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে উঠল ন্যায়বিচারের দাবি।
কলকাতা, বাঁকুড়া, শ্রীরামপুর, মেদিনীপুর, আলিপুরদুয়ার এবং চুঁচুড়াসহ রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের ছবি ধরা পড়েছে। কলকাতায় রুবির রাস্তায় মহিলারা ভোরের আলো ফোটার আগেই প্রতিবাদে সামিল হন, তিলোত্তমার হত্যার ন্যায়বিচার চেয়ে পথের ধারে ছবিও আঁকা হয়। বেহালা থানার উল্টো দিকে জোকা ইএসআই হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তাররা তিলোত্তমার খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পথনাটিকা করেন, যা পথচারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
বাঁকুড়ার গন্ধেশ্বরী নদীর সতীঘাটে পিতৃপক্ষের তর্পণের মাঝেও তিলোত্তমার আত্মার শান্তি কামনায় গণতর্পণ করা হয়। এই কর্মসূচিতে বহু মানুষ অংশগ্রহণ করেন, যারা তিলোত্তমার জন্য ন্যায়বিচারের দাবি তোলেন।
শ্রীরামপুরেও দেবীপক্ষের সূচনাতে মহিলারা প্ল্যাকার্ড হাতে মিছিল করে তিলোত্তমার জন্য ন্যায় চেয়ে রাস্তায় নামেন। মেদিনীপুরে রাতে মশাল মিছিল, পথনাটিকা, কবিতা আবৃত্তি, আদিবাসী নৃত্যসহ বিভিন্ন প্রতিবাদের মাধ্যমে তিলোত্তমার জন্য ন্যায়বিচার চেয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হয়।
আলিপুরদুয়ার এবং চুঁচুড়ায়ও তিলোত্তমার জন্য ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়ে ভোরের রাস্তায় প্রতিবাদী মানুষজনের মিছিল দেখা গেছে। আলিপুরদুয়ার নাগরিক সমাজের উদ্যোগে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ভোর দখল কর্মসূচি চলে, যেখানে বহু মহিলা অংশগ্রহণ করেন। চুঁচুড়ায় "পুজোয় আছি, প্রতিবাদেও আছি" শ্লোগান তুলে, দেবী দুর্গার ছবিতে ধূপ-ধুনো জ্বালিয়ে মহালয়ার ভোরে একটি অভিনব প্রতিবাদের আয়োজন করা হয়।
তিলোত্তমার হত্যার বিচার না পাওয়া পর্যন্ত এই ধরনের প্রতিবাদ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করছেন সাধারণ মানুষ, যা রাজ্যজুড়ে এক নতুন আন্দোলনের জন্ম দিয়েছে।