উত্তর প্রদেশ পুলিশের এক পদক্ষেপে সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে নতুন উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। অল্ট নিউজের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ জুবাইরের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে যে তিনি সামাজিক মাধ্যম পোস্টের মাধ্যমে "ভারতের সার্বভৌমত্ব ও ঐক্য বিপন্ন করেছেন"।
জুবাইরের বিরুদ্ধে এই এফআইআর দায়ের করা হয়েছে তাঁর একটি টুইটকে কেন্দ্র করে, যেখানে তিনি যতি নারসিংহানন্দের ঘৃণাত্মক বক্তব্য তুলে ধরেছিলেন। নারসিংহানন্দ ইতোমধ্যে সাম্প্রদায়িক ঘৃণার জন্য একাধিক এফআইআরের মুখোমুখি হয়েছেন।
এক্ষেত্রে আইন হিসেবে প্রয়োগ করা হয়েছে ভারত ন্যায় সংহিতা (BNS)-এর ১৫২ ধারা, যা উপনিবেশিক যুগের দেশদ্রোহ আইনকে নতুন রূপে নিয়ে এসেছে। সমালোচকরা বহুদিন ধরেই এই আইনের অপব্যবহারের আশঙ্কা করে আসছিলেন, এবং জুবাইরের ঘটনা সেই আশঙ্কাকে সত্য প্রমাণ করছে।
মতপ্রকাশ ও সাংবাদিকতার ওপর চাপ
জুবাইরের বিরুদ্ধে এই মামলা শুধু একজন সাংবাদিককে লক্ষ্যবস্তু করা নয়; এটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলছে। অল্ট নিউজ, যা ভুল তথ্য ও ঘৃণার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করে, এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেছে, "এটি শুধু একজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা নয়, এটি ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করার অধিকারেও আঘাত"।
১৫২ ধারা, যা মূলত জাতীয় ঐক্য রক্ষার জন্য প্রণীত হয়েছে, এখন সমালোচনামূলক কণ্ঠকে দমন করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। জুবাইরের পোস্টে ঘৃণাত্মক বক্তব্য তুলে ধরা সত্ত্বেও, তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা সত্যিকারের অপরাধীদের বদলে সাংবাদিকদের নিশানা করার প্রবণতাকে সামনে আনে।
আদালতের দিকে নজর
মঙ্গলবার এই মামলার শুনানি হবে। অল্ট নিউজ তাদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেছে, "মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, নিরপেক্ষ সাংবাদিকতা এবং সত্য যাচাইয়ের লড়াইয়ে আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আহ্বান জানাই।"
এই ঘটনা শুধু ভারতেই নয়, সারা বিশ্বে সাংবাদিকতার জন্য একটি সংকেত দেয়। স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর যে চাপ বাড়ছে, তা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ওপরেও প্রভাব ফেলছে।