জাতিসংঘ ইসরায়েলকে গাজায় অবাধ মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দিতে জোরালো আহ্বান জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের উদ্ধৃতি দিয়ে শুক্রবার জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টেফানে ডুজারিক বলেন, "বেসামরিক জনগণের যেখানেই থাকা হোক না কেন, তাদের সহায়তা পাওয়ার অধিকার রয়েছে।"
ডুজারিক জানান, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ উত্তর গাজার কামাল আদওয়ান ও আল-আওদা হাসপাতালগুলোতে প্রবেশের অনুরোধ বারবার প্রত্যাখ্যান করেছে। তিনি বলেন, "বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে যে, এই হাসপাতালগুলোতে তাদের প্রবেশের চেষ্টা অব্যাহতভাবে ব্যর্থ হচ্ছে।"
গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক জরুরি চিকিৎসা দলকে ওই এলাকায় মোতায়েনের তিনটি প্রচেষ্টাই ইসরায়েলি বাধার কারণে ব্যর্থ হয়েছে। এরই মধ্যে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে উত্তর গাজা সম্পূর্ণ অবরোধের মধ্যে রয়েছে, এবং সেখানকার জনগণকে দক্ষিণে চলে যেতে বলা হয়েছে। তবে, দক্ষিণে যাওয়ার পথে ফিলিস্তিনিরা স্নাইপার ও ড্রোন হামলার শিকার হয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের অপারেশন আল-আকসা স্টর্মের প্রতিক্রিয়ায় গাজায় সর্বাত্মক হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনিদের ওপর কয়েক দশকের রক্তপাত ও দমনপীড়নের প্রতিক্রিয়ায় এই অভিযান চালানো হয়।
ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৩,৭৩০ এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন ১,০৩,০০০ এর বেশি মানুষ। এছাড়া ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন এবং মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গাজায় দীর্ঘমেয়াদী অবস্থানের পরিকল্পনায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় দীর্ঘমেয়াদী অবস্থানের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে এক প্রতিবেদনে জানা গেছে। ইসরায়েলি পত্রিকা হারেৎজ জানিয়েছে, "মাঠের পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ২০২৬ সালের আগে গাজা ছাড়বে না।"
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল গাজায় ভবন নির্মাণ, প্রশস্ত রাস্তা এবং পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থা উন্নয়নের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এসব নির্মাণকাজ ইসরায়েলের দীর্ঘমেয়াদী সামরিক উপস্থিতির ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।