নয়াদিল্লি, ২১ নভেম্বর ২০২৪ — মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গৌতম আদানি এবং তার কোম্পানির সাতজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর ভারতীয় অর্থনীতি এবং রাজনীতিতে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, আদানি গ্রুপ একটি বহু-বিলিয়ন ডলারের ঘুষ ও দুর্নীতির জাল বুনেছে, যা দেশের এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে।
এই ঘটনা ভারতের অন্যতম ধনী শিল্পপতির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক স্তরে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ। আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ বিভিন্ন সরকারি টেন্ডার পাওয়ার জন্য ২০০০ কোটি টাকারও বেশি ঘুষ প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রবল প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
শাসক দলের নীরবতা ও বিরোধী দলের প্রতিবাদ
বিরোধী দলগুলো এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজেপি সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তাদের দাবি, আদানি এবং শাসক দলের মধ্যে গভীর সম্পর্ক দেশের অর্থনীতি এবং গণতন্ত্রের ক্ষতি করছে। যদিও বিজেপি এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে, বিরোধীদের মতে, সরকারের নীরবতা শাসক দলের এবং আদানি গ্রুপের মধ্যকার অশুভ আঁতাতের প্রমাণ।
অর্থনীতিতে প্রভাব
গৌতম আদানি দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্কিত। তার নেতৃত্বে আদানি গ্রুপ বিদ্যুৎ, খনিজ, এবং বন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে আধিপত্য বিস্তার করেছে। মার্কিন অভিযোগের পর আদানি গ্রুপের শেয়ারগুলিতে ২০% পর্যন্ত পতন ঘটেছে। এই পতনের ফলে শেয়ার বাজারে বিশাল ধাক্কা লেগেছে এবং হাজারো ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।
পরিবেশ ও সামাজিক প্রভাব
আদানি গ্রুপের প্রকল্পগুলোর কারণে পরিবেশ ধ্বংস এবং শ্রমিকদের শোষণের অভিযোগ বহুদিনের। পাশাপাশি, কৃষিক্ষেত্রে তাদের একচেটিয়া দখল ছোট ও মাঝারি কৃষকদের বিপদে ফেলছে।
জনআন্দোলনের প্রয়োজন
এই ঘটনায় গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের পক্ষে মানুষের ঐক্যবদ্ধ হওয়া জরুরি। শাসক-বানিজ্য আঁতাত রুখতে স্বচ্ছ নীতির দাবি এবং স্বাধীন গণমাধ্যমের প্রয়োজনীয়তা বারবার উঠে আসছে।
গৌতম আদানির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দেশের পুঁজিবাদী ব্যবস্থার অন্ধকার দিকগুলো তুলে ধরেছে। এর প্রভাব ভারতের অর্থনীতি এবং জনজীবনে দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে, যদি না এই প্রক্রিয়ায় দ্রুত গণতান্ত্রিক হস্তক্ষেপ করা হয়।