ভিউজ নাউ ডেস্ক:
কাটকে অনুষ্ঠিত ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) বা সিপিআই(এম)-এর ওড়িশা রাজ্য সম্মেলন সফলভাবে সমাপ্ত হয়েছে। সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ছিল তৃণমূল পর্যায়ে পার্টির আদর্শিক ও সাংগঠনিক প্রভাব বিস্তার করা।
গণসমাবেশ ও উদ্বোধনী মিছিল
১৬ ডিসেম্বর সম্মেলন শুরু হয় এক বিশাল গণসমাবেশ ও মিছিলের মাধ্যমে। প্রায় ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ মিছিল কাটক রেলস্টেশন থেকে বলিয়াত্রা পাড়িয়া পর্যন্ত চলে, যাতে হাজার হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। গণসমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিআই(এম)-এর পলিট ব্যুরো সদস্য কমরেড সুর্যকান্ত মিশ্র, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড অমর রাম, আলি কিশোর পটনায়েক, লক্ষ্মণ মুন্ডা (এমএলএ), পুষ্পা দাস এবং বদ্রীনারায়ণ দাস। সভার সভাপতিত্ব করেন প্রবীণ নেতা কমরেড জনার্দন পতি।
প্রতিনিধি অধিবেশন
প্রতিনিধি অধিবেশন শুরু হয় ১৭ ডিসেম্বর বারাবাটি স্টেডিয়ামে (সীতারাম ইয়েচুরি নগর - শিবাজি পটনায়েক মঞ্চ) জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে। কমরেড জনার্দন পতি পতাকা উত্তোলন করেন। অধিবেশনে ১৬৬ জন নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং ২২ জন পর্যবেক্ষক অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বিভিন্ন কমিটি গঠন করা হয়।
পলিট ব্যুরো সদস্য সুর্যকান্ত মিশ্র অধিবেশনের উদ্বোধন করেন। এই অধিবেশনে সিপিআই, সিপিআই(এমএল) লিবারেশন এবং অল ইন্ডিয়া ফরোয়ার্ড ব্লকের নেতারা অংশগ্রহণ করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক রিপোর্ট আলোচনা
কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড আলি কিশোর পটনায়েক রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন, যা নিয়ে ৫৭ জন প্রতিনিধি বিশদ আলোচনা করেন।
নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন
সম্মেলনে ৩০ সদস্যের একটি নতুন রাজ্য কমিটি গঠিত হয় এবং কমরেড সুরেশ পানিগ্রাহীকে নতুন রাজ্য সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। আসন্ন পার্টি কংগ্রেসের জন্য ওড়িশা থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্যে রয়েছেন সুরেশ পানিগ্রাহী, সন্তোষ দাস, দুষ্মন্ত দাস, প্রমোদ কুমার সামল, লক্ষ্মণ মুন্ডা এবং পুষ্পা দাস।
বিশেষ প্রদর্শনী ও আন্তর্জাতিকতাবাদ
সম্মেলনের এক পাশে "কমিউনিস্ট আন্দোলনের গৌরবময় অতীত ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ" শীর্ষক একটি প্রদর্শনী আয়োজিত হয়, যা উদ্বোধন করেন কমরেড সুর্যকান্ত মিশ্র। সম্মেলনের শেষ দিন ইন্টারন্যাশনালের গান গেয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনা
সম্মেলনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব পাস করা হয়, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
- ফিলিস্তিনের সঙ্গে সংহতি
- সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ
- "এক দেশ, এক নির্বাচন" নীতির বিরোধিতা
- কৃষক-শ্রমিক ঐক্য
- কৃষি সংকট ও দালিত, আদিবাসী এবং নারী সমস্যা
- নতুন শিক্ষানীতির বিরোধিতা
- জনস্বাস্থ্য, মূল্যবৃদ্ধি এবং বেকারত্ব ইস্যু
- কৃষক ও শ্রমিক ঋণ মওকুফের দাবি
- ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (MSP)-এর আইনি গ্যারান্টি।
সিপিআই(এম)-এর পলিট ব্যুরো সদস্য কমরেড নিলোৎপল বসু আন্তর্জাতিক পুঁজিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের চ্যালেঞ্জগুলি তুলে ধরে তৃণমূল পর্যায়ে ঐক্য জোরদার করার আহ্বান জানান। তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে শ্রমজীবী মানুষের জন্য লাল পতাকা আজও আশা ও সংগ্রামের প্রতীক।
ভিউজ নাউ-এ রাজনৈতিক সম্মেলন সংক্রান্ত আরও আপডেটের জন্য আমাদের সঙ্গে থাকুন।