পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের পূর্ব এরিয়া-৩-এর সম্মেলন উপলক্ষে আজ বিধাননগরে একটি জনসভার আয়োজন করা হয়। জনসভায় মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিপিআইএম রাজ্য কমিটির সদস্য এবং যুব সংগঠনের সভানেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়।
ধর্মের বিভাজন এবং সংবিধানের অবমাননার বিরুদ্ধে সিপিআইএম-এর অবস্থান
মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় তাঁর বক্তব্যে জোর দিয়ে বলেন, "দেশজুড়ে ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজনের খেলা চলছে যা আমাদের সংবিধান এবং গণতান্ত্রিক কাঠামোকে ধ্বংস করছে।" তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে বামেরা নিরলস লড়াই চালিয়ে যাবে।
কর্মসংস্থান ধ্বংস করে ধর্মের রাজনীতির প্রচারণা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করেন মীনাক্ষী। তিনি বলেন, "দেশের উন্নয়নের গতিকে স্তব্ধ করে, কেন্দ্রীয় সরকার দেশের অন্ধকার ভবিষ্যৎ তৈরি করছে।"
অমিত শাহের মন্তব্য এবং বিজেপি-র ভূমিকা
গতকাল সংসদে অমিত শাহের বক্তব্যে সংবিধান প্রণেতা ড. বি. আর. আম্বেদকরকে অসম্মান করা হয়েছে বলেও তীব্র নিন্দা করেন তিনি। মীনাক্ষী মন্তব্য করেন, "এটা স্পষ্ট যে বিজেপি দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামো এবং সংবিধান ধ্বংস করার পথে অগ্রসর হচ্ছে।"
তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা
মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের ভূমিকারও তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, "২০১১ সালের পর থেকেই রাজ্যে গণতন্ত্র বিপন্ন। ভোটে মানুষের স্বাধীন মতপ্রকাশ বারবার হরণ করা হচ্ছে।"
দুর্গাপুরের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ
দুর্গাপুর, যা একসময় শিল্পনগরী নামে পরিচিত ছিল, বর্তমানে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের নীতির কারণে একটি মৃতপ্রায় শহরে পরিণত হয়েছে। এলাকার বেকার যুবকদের চাকরির অভাব এবং চলমান লুটপাটের রাজনীতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মীনাক্ষী।
নারী স্বাধীনতা এবং প্রশাসনিক ব্যর্থতা
নারী নির্যাতনের পরিসংখ্যান তুলে ধরে মীনাক্ষী বলেন, "রাজ্যে নারীর স্বাধীনতা ভূলুণ্ঠিত। আরজিকর হাসপাতালের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলি রাজ্য প্রশাসনের ব্যর্থতার উদাহরণ।"
রাজপথে আন্দোলনের ডাক
আজকের জনসভায় উপস্থিত বহু মানুষ শীত উপেক্ষা করে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য শুনতে হাজির হন। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, "বামেরা রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমেই মানুষের মুক্তির পথ দেখাবে। সংসদ বা বিধানসভায় না পাওয়া গেলেও মানুষের আস্থা অর্জনের জন্য রাজপথ আমাদের প্রধান মাধ্যম।"
এই জনসভা বামেরা রাজ্য এবং জাতীয় স্তরে আন্দোলন তীব্রতর করার অঙ্গীকার নিয়ে শেষ হয়।