মণিপুরে স্টারলিঙ্ক ডিভাইস ব্যবহারের দাবি নিয়ে সম্প্রতি ভারতজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর স্পিয়ার কর্পস সম্প্রতি একটি অভিযান চালিয়ে কিছু সামগ্রী জব্দ করে। সেই সামগ্রীর মধ্যে স্টারলিঙ্কের লোগো সম্বলিত একটি ডিভাইস পাওয়া যায়। এই ঘটনা দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন মহলে বিতর্ক শুরু হয়।
স্টারলিঙ্ক হলো ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্পেসএক্সের একটি স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা। এই সেবাটি পৃথিবীর প্রত্যন্ত অঞ্চলে দ্রুতগতির ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে সক্ষম। তবে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে স্টারলিঙ্ককে এখনও কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় লাইসেন্স প্রদান করা হয়নি।
ঘটনাটি নিয়ে আলোচনার প্রেক্ষিতে স্টারলিঙ্কের সিইও ইলন মাস্ক একটি বড় বিবৃতি দেন। তিনি বলেন, "স্যাটেলাইট থেকে ইন্টারনেট ডেটা সরবরাহ করা হয়, তবে আমাদের ভারতে কার্যক্রম পরিচালনার কোনো অনুমতি নেই।" তার এই বক্তব্য স্পষ্ট করেছে যে, ভারতে স্টারলিঙ্কের কোনো অনুমোদিত কার্যক্রম চলছে না।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারও স্টারলিঙ্ককে ইতোমধ্যেই সতর্ক করেছে। গত বছর স্টারলিঙ্ককে জানানো হয়েছিল, তারা কোনো লাইসেন্স ছাড়াই ভারতে প্রি-বুকিং এবং ডিভাইস বিক্রি বন্ধ রাখবে। এরপর কোম্পানিটি তাদের কার্যক্রম সীমিত করে এবং লাইসেন্স পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।
এদিকে মণিপুরে সংঘটিত ঘটনাটি বড় প্রশ্ন তুলেছে। সেনাবাহিনীর অভিযান এবং স্টারলিঙ্ক ডিভাইস জব্দ করার ঘটনা কীভাবে সংঘটিত হলো এবং সেই ডিভাইস কীভাবে ব্যবহৃত হচ্ছিল, তা নিয়ে তদন্ত চলছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং কেন্দ্রীয় সরকার বিষয়টি নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ঘটনাটি প্রযুক্তি এবং নিরাপত্তা বিষয়ক বড় ইঙ্গিত বহন করে। ভারতের মতো দেশে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে সঠিক নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।
ইলন মাস্কের স্টারলিঙ্ক সারা বিশ্বে প্রযুক্তিগত বিপ্লব ঘটালেও, এটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকারের অনুমোদন গুরুত্বপূর্ণ। মণিপুরের এই ঘটনাটি ভবিষ্যতে ভারতের টেলিকম এবং স্যাটেলাইট নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।