মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার সাম্রাজ্যবাদী নীতি অব্যাহত রেখে বিশ্বব্যাপী সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে, যা বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে, চীনকে মোকাবেলা করার উদ্দেশ্যে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তাদের সামরিক ঘাঁটি শক্তিশালী করা হচ্ছে।
গুয়ামে সামরিক বিনিয়োগ:
২০২৫ সালের জাতীয় প্রতিরক্ষা অনুমোদন আইনে গুয়ামের জন্য ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি বরাদ্দ করা হয়েছে, যা চীনের নিকটবর্তী অবস্থানের কারণে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হচ্ছে। এছাড়া, ওকিনাওয়া থেকে প্রথম ১০০ জন মার্কিন মেরিন সৈন্য ১৪ ডিসেম্বর মেরিন কর্পস বেস ক্যাম্প ব্ল্যাজ-এ স্থানান্তরিত হয়েছে, এবং ভবিষ্যতে আরও সৈন্য আসার পরিকল্পনা রয়েছে। গুয়ামে এজিস সিস্টেমের মাধ্যমে একটি মধ্যম-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে প্রতিহত করা হয়েছে, যা এই অঞ্চলে মার্কিন প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়ানোর ইঙ্গিত দেয়।
অন্যান্য মার্কিন অঞ্চলসমূহে সামরিক সম্প্রসারণ:
পুয়ের্তো রিকো: এখানে ফোর্ট বুচানান এবং রাডার সুবিধাসহ বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা রয়েছে। এছাড়া, কর সুবিধার কারণে সস্তায় উৎপাদন সম্ভব, যা মার্কিন সামরিক শাখাগুলোর জন্য উল্লেখযোগ্য নিয়োগ প্রদান করে।
উত্তর মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জ: এখানে বিমানবন্দর পুনর্বাসন, যুদ্ধ প্রশিক্ষণ সাইট এবং টিনিয়ান হারবারের উন্নয়নের জন্য ৮০০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে।
মার্কিন ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ: এটি ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে একটি কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে, যেখানে সেন্ট ক্রয় দ্বীপে এয়ার ন্যাশনাল গার্ড অবস্থান করছে, যা উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার বাজারে প্রবেশের সুযোগ প্রদান করে।
আমেরিকান সামোয়া: এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ নৌ ঘাঁটি, যেখানে পাগো পাগো'র সুরক্ষিত হারবার রয়েছে। ২০২১ সালে, এখানকার মার্কিন আর্মি নিয়োগ কেন্দ্রটি নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রথম স্থান অর্জন করেছে।
ওয়াশিংটন এই সামরিক সম্প্রসারণকে "নিরাপত্তা" নিশ্চিত করার জন্য দাবি করলেও, প্রকৃতপক্ষে এটি চীনের উত্থানের প্রতিক্রিয়ায় তাদের দ্বীপ ঘাঁটিগুলোকে শক্তিশালী করছে। এই অঞ্চলগুলো, যা প্রায়শই ঔপনিবেশিক অবশিষ্টাংশ হিসেবে বিবেচিত হয়, এখন সামরিক উপস্থিতি ও উস্কানির জন্য কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
তবে, এই সামরিক সম্প্রসারণের পেছনে একটি হতাশা লুকিয়ে রয়েছে; যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে, সেখানে ইউরেশিয়া সেতু নির্মাণে মনোনিবেশ করছে। প্রশান্ত মহাসাগর আর শুধুমাত্র আমেরিকার নিয়ন্ত্রণে নেই, এবং কোনো ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইতিহাসের পরিবর্তনকে থামাতে পারবে না।