রাত্রি ১২টা ৪৯। কোলকাতা সহ গোটা রাজ্য শীতের লেপের তলায়। তবে পশ্চিম মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের ঘটনা রাজ্যের শীতল নীরবতাকে চুরমার করে দিয়েছে। কয়েক ঘণ্টা আগে সেখানে নিষিদ্ধ স্যালাইনের প্রয়োগে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, এই ঘটনার জেরে কোমায় চলে গেছেন আরো তিনজন। তাদের পিজি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
রাজ্যের প্রশাসনিক মহল যেন পুরোপুরি ঘুমিয়ে। শাসকদলের দায়িত্বশীল নেতারা কোথাও নেই। তথাকথিত বিরোধী দলগুলোর নেতৃত্বও যেন কুয়াশার চাদরে নিজেদের আড়াল করেছেন। অথচ পিজির খোলা আকাশের নিচে, কনকনে ঠান্ডায়, পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছেন কিছু মানুষ।
ধ্রুব, মিনাক্ষীদের মতো লাল ঝান্ডার কর্মীরা আজ আবার প্রমাণ করে দিলেন, মানুষের সেবা করার জন্য রাজনীতি নয়, মানবিকতাই প্রধান। হয়তো এই অসহায় মানুষগুলো বিগত নির্বাচনে ভোট দেননি, কিন্তু ভোট দেওয়া না দেওয়াই তো শেষ কথা নয়। মানুষের পাশে থাকা, তাদের দুর্ভোগের সময় পাশে দাঁড়ানোই প্রকৃত কাজ।
এই ঘটনা প্রশ্ন তুলে দিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে। কীভাবে নিষিদ্ধ স্যালাইন একটি মেডিকেল কলেজে পৌঁছায়? কে তার দায়ভার নেবে? প্রশাসনের এই উদাসীনতায় সাধারণ মানুষের জীবন আজ বিপন্ন।
এদিকে লাল ঝান্ডার কর্মীরা তাদের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর এই লড়াইতে তারা আবার প্রমাণ করলেন, তারা শুধু রাজনৈতিক কর্মী নন, তারা সাধারণ মানুষের সেবক।
এবার সময় এসেছে প্রশাসন ও সমাজের দায়িত্বশীল অংশের জেগে ওঠার। সাধারণ মানুষের জীবন কোনো সংখ্যা নয়। এই ঘটনার সঠিক তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি। লাল ঝান্ডার কর্মীদের এই মানবিক পদক্ষেপ রাজনীতির প্রকৃত অর্থ আমাদের সামনে তুলে ধরেছে।