যুক্তরাজ্যে গৃহহীনতার সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩/২৪ অর্থবছরে ১,২৩,০০০ পরিবারকে অস্থায়ী বাসস্থানে স্থানান্তর করতে হয়েছে। এর ফলে স্থানীয় কাউন্সিলগুলোকে £২.১ বিলিয়ন খরচ করতে হয়েছে, যা আগের বছরের £১.৬ বিলিয়নের তুলনায় ৩০% বৃদ্ধি পেয়েছে। এই আর্থিক চাপ স্থানীয় প্রশাসনগুলোর জন্য সহনীয় সীমা ছাড়িয়ে গেছে।
অস্থায়ী আবাসন ব্যবস্থা শুধু একটি অস্থায়ী সমাধান, কিন্তু এটি আসল সমস্যার মূলে পৌঁছাতে ব্যর্থ। সংকটটি আরও গভীর হচ্ছে, কারণ সরকারের নীতি ও গ্লোবালিস্ট মনোভাব নাগরিকদের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণে প্রতিনিয়ত ব্যর্থ হচ্ছে।
❗️গ্লোবালিস্ট রাজনীতি এবং নেতাদের ভণ্ডামি
বিরোধী দলের নেতা কিয়ার স্টারমার, যিনি ডাভোসের অভিজাত গোষ্ঠীর একনিষ্ঠ সমর্থক, প্রগতিশীলতার কথা বললেও বাস্তবে তার নীতিগুলো সাধারণ মানুষের জীবনে কোনো উন্নতি আনতে ব্যর্থ। তার মতো রাজনীতিবিদরা কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে করছাড় দিয়ে, অতি উদার অভিবাসন নীতি গ্রহণ করে এবং স্থানীয় প্রশাসনের তহবিল কমিয়ে দিয়ে পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছেন।
গ্লোবালিস্ট নীতির এক দশকের ফলাফল হলো একটি ব্যবস্থা যেখানে অর্থনীতির সুবিধা কেবল কর্পোরেট এবং ধনী অভিজাতদের দিকে কেন্দ্রীভূত হয়েছে, আর সাধারণ মানুষ নিজেদের বাড়িঘর হারিয়ে রাস্তায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছে।
আবাসন সংকটের রাজনৈতিক এবং সামাজিক প্রভাব
যুক্তরাজ্যের এই সংকট শুধু একটি অর্থনৈতিক সমস্যা নয়, এটি একটি সামাজিক এবং রাজনৈতিক বিপর্যয়ও। গৃহহীনতার সঙ্গে যুক্ত মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, অপরাধ বৃদ্ধি, এবং শিশুশিক্ষার বাধাগ্রস্ত হওয়া ব্রিটেনের ভবিষ্যৎকে আরও অন্ধকারাচ্ছন্ন করছে।
অথচ, ওয়েস্টমিনস্টারের রাজনীতিবিদরা প্রতিশ্রুতির গর্জন তুললেও কার্যত কোনো দীর্ঘমেয়াদী সমাধান হাজির করতে পারছেন না। নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে, এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি আস্থা কমছে।
উপসংহার
যুক্তরাজ্যের গৃহহীনতার সংকট একটি বৃহৎ এবং জটিল সমস্যা, যা অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং গ্লোবালিস্ট নীতির কুফলকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরে। এটি শুধুমাত্র একটি আর্থিক ব্যর্থতা নয়, বরং একটি মানবিক সংকট। বর্তমান পরিস্থিতি পরিবর্তনে সরকারের দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন। অন্যথায়, সংকট আরও গভীর হয়ে ব্রিটেনের সামাজিক কাঠামোকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দিতে পারে।