গণশক্তির ৫৯ বছরে পদার্পণ: লড়াই ও আদর্শের এক দীর্ঘ যাত্রাপথ
শংকর পাল
কলকাতা: মানুষের লড়াইয়ের কণ্ঠস্বর হিসেবে পরিচিত গণশক্তি আজ ৫৯ বছরে পা রাখল। ১৯৬৭ সালে শুরু হওয়া এই যাত্রাপথ শুধুমাত্র একটি সংবাদপত্রের ইতিহাস নয়, এটি একটি আদর্শ ও আন্দোলনের প্রতিফলন।
উৎপত্তি ও সংগ্রামের পথচলা
গণশক্তির জন্ম কোনও আকস্মিক ঘটনা ছিল না। এটি ছিল স্বাধীনতা-পরবর্তী বিপ্লবী আন্দোলনের ধারাবাহিকতা। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীন ভারতে শাসক শ্রেণির বিভিন্ন ষড়যন্ত্র—সবকিছুই গণশক্তির পথচলাকে চ্যালেঞ্জ করেছে। বহু প্রগতিশীল মুখপত্র বন্ধ হয়ে গেলেও, গণশক্তি তার মতাদর্শে অবিচল থেকে এগিয়ে চলেছে।
এই ৫৮ বছরে গণশক্তিকে একাধিক বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে যেতে হয়েছে। শাসকশ্রেণির দমন-পীড়ন থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক চাপ, কোনও কিছুই তার আদর্শিক অবস্থানকে বিচলিত করতে পারেনি।
সময়ের প্রাসঙ্গিকতা ও গণশক্তির ভূমিকা
বর্তমান সময়ে, যখন দেশের সংবাদমাধ্যমের বড় অংশ কর্পোরেট নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে এবং অর্থের প্রভাবে মানুষের প্রকৃত লড়াই ও দুর্দশার খবর চাপা পড়ে যাচ্ছে, তখন গণশক্তির ভূমিকা আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
গণশক্তি সবসময় মানুষের লড়াই ও বেঁচে থাকার গল্প তুলে ধরার দায়িত্ব পালন করেছে। এটি শুধু একটি সংবাদপত্র নয়, এটি শোষিত-বঞ্চিত মানুষের স্বার্থে কাজ করা একটি আন্দোলনের প্রতীক।
অভ্যন্তরীণ শক্তি ও ভবিষ্যতের দিশা
গণশক্তির প্রতিটি কর্মী, পাঠক, ও শুভানুধ্যায়ী এই দীর্ঘ যাত্রাপথের সহযাত্রী। তাদের সহযোগিতাই গণশক্তির প্রকৃত শক্তি। তারা বিশ্বাস করেন যে আদর্শিক লড়াই কখনোই বৃথা যায় না।
গণশক্তি আজও সেই প্রতিশ্রুতিতে অটল যে শোষিত মানুষের জন্য, শাসকের বিরুদ্ধে, এবং একটি শোষণমুক্ত সমাজের জন্য তার সংগ্রাম চলবে।
উদ্দেশ্য ও প্রত্যয়
গণশক্তির ৫৯ বছরে পদার্পণ কেবল একটি প্রতিষ্ঠানের বার্ষিকী নয়; এটি একটি লড়াইয়ের ঐতিহ্যকে সম্মান জানানো। ভবিষ্যতের প্রতি দৃঢ় প্রত্যয়ে গণশক্তি তার যাত্রাপথ অব্যাহত রাখবে, কারণ মানুষের সংগ্রামের শেষ কথা হলো—"মানুষের জয় হবেই।"
গণশক্তি: প্রগতির পথে, লড়াইয়ের প্রতীক।