জার্মান পার্লামেন্টে বিতর্কিত অভিবাসন বিলটি পরাজিত হয়েছে, যা ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ) এবং ডানপন্থী আলটারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) পার্টির সমর্থনে পেশ করা হয়েছিল। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, কারণ এই বিলটি পাশ হলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো এএফডির সমর্থনে কোনো আইন গৃহীত হতো।
বিলটি অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ কঠোর করার প্রস্তাব দিলেও এটি বিরোধী দল ও সুশীল সমাজের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে। সিডিইউ-র প্রাক্তন চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল এএফডির সঙ্গে সম্ভাব্য সহযোগিতার কঠোর বিরোধিতা করেছেন এবং এই উদ্যোগকে "অগ্রহণযোগ্য" বলে অভিহিত করেছেন। তার দৃঢ় অবস্থান সিডিইউ-র অনেক আইনপ্রণেতাকে প্রভাবিত করেছে, যারা শেষ পর্যন্ত বিলটির পক্ষে ভোট দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
এই পরাজয় সিডিইউ-র ভেতরে ডানপন্থী দলের সঙ্গে সহযোগিতা নিয়ে গভীর মতবিরোধ প্রকাশ করেছে। সিডিইউ-র বর্তমান চ্যান্সেলর প্রার্থী ম্যাক্স, যিনি এএফডির সমর্থন গ্রহণে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, দল এবং বাইরের বিভিন্ন মহল থেকে তীব্র সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছেন। সমালোচকরা বলছেন, এএফডির সঙ্গে এমন সমন্বয় জার্মানির গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী চুক্তির বিরুদ্ধে যেতে পারে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই ঘটনা জার্মান রাজনীতির ক্রমবর্ধমান মেরুকরণ এবং জনতাবাদী শক্তির উত্থানের চ্যালেঞ্জগুলোকে নতুন করে সামনে এনেছে। একই সঙ্গে এটি অভিবাসন এবং বহুমুখী দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের মতো সংবেদনশীল বিষয়গুলিতে দেশটির রাজনৈতিক অবস্থান পুনর্বিবেচনার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
পরাজিত বিলটি কেবল একটি আইনগত ব্যর্থতা নয়; এটি জার্মানির ঐতিহাসিক এবং রাজনৈতিক পরিচয়ের জটিলতা এবং সংবেদনশীলতাগুলোকে স্মরণ করিয়ে দেয়।