২৯ জানুয়ারি ২০২৫, বুধবার, কৃষক-ক্ষেতমজুর সংগ্রাম পরিষদের ডাকে দেশজুড়ে বিক্ষোভ ও কৃষি উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি পেশের কর্মসূচি পালিত হতে চলেছে। এই কর্মসূচি দেশের কৃষক, ক্ষেতমজুর, ভূমিহীন, প্রান্তিক কৃষক এবং শ্রমজীবী মানুষের জীবনমান উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিক্ষোভের পটভূমি ও প্রয়োজনীয়তা:
বর্তমানে কৃষি খাত নানা সমস্যায় জর্জরিত। ন্যায্যমূল্য না পাওয়া, উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি, সারের সংকট, সেচের পানির অভাব, এবং ফসল সংরক্ষণের পর্যাপ্ত হিমাগার না থাকায় কৃষক ও ক্ষেতমজুরদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তির লক্ষ্যে কৃষক-ক্ষেতমজুর সংগ্রাম পরিষদ একসঙ্গে একাধিক দাবি উত্থাপন করেছে এবং এর সমাধানের জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।
মূল দাবি ও উদ্দেশ্য:
কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য হল দেশের কৃষি খাতকে টেকসই করা এবং কৃষকদের জীবনমান উন্নয়নে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ। তাদের উত্থাপিত প্রধান দাবিগুলি হলো:
- কৃষি উৎপাদনের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা: ফসলের ন্যায্যমূল্য না পেলে কৃষকেরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ধান, আলু, সবজি সহ বিভিন্ন ফসলের লাভজনক দাম নিশ্চিত করা জরুরি।
- বিডিএসের মাধ্যমে সময়মতো সরবরাহ: সারের অভাব, কীটনাশক ও সেচের পানির সঠিক সরবরাহ নিশ্চিত করা।
- ফসল সংরক্ষণে হিমাগার: আলুসহ সংরক্ষণযোগ্য ফসলের জন্য পর্যাপ্ত হিমাগার নির্মাণ করা।
- কৃষি কার্ড প্রদান: ভূমিহীন ও প্রান্তিক কৃষকদের জন্য বিশেষ কৃষি কার্ড প্রবর্তন।
- যন্ত্রপাতিতে ভ্যাট-কর প্রত্যাহার: উৎপাদনশীল যন্ত্রপাতির উপর থেকে ভ্যাট-কর কমিয়ে কৃষকদের জন্য সুলভ করা।
- কৃষি-শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন: গ্রাম ও শহরের শ্রমজীবী মানুষের জন্য ন্যায্য মজুরি এবং রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা।
বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচি:
এই দিনটি সারাদেশের কৃষক, ক্ষেতমজুর এবং সাধারণ মানুষের একাত্মতার প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত হতে চলেছে। কৃষি উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে এসব দাবির সমাধানের জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে।
সংগ্রাম পরিষদের আহ্বান:
কৃষক-ক্ষেতমজুর সংগ্রাম পরিষদ জানিয়েছে, এই আন্দোলন কেবলমাত্র কৃষকদের অধিকার আদায়ের জন্য নয়, এটি দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিষদ দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, সকলে এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে তাদের ন্যায্য দাবি সমর্থন করবে।
"কৃষি-কৃষক বাঁচাও, দেশ বাঁচাও" স্লোগানে একজোট হওয়ার ডাক
এই আন্দোলন কেবলমাত্র কৃষি সমস্যার সমাধান নয়, এটি দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। পরিষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, "সব হাতে কাজ চাই, সব মুখে ভাত চাই" স্লোগানকে সামনে রেখে তারা লড়াই চালিয়ে যাবে।