তৃণমূল কংগ্রেসে (টিএমসি) সম্প্রতি একাধিক বিতর্ক ও অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে। দলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষের শিল্পীদের বয়কট করার আহ্বান এবং দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিল্পীদের স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান দু’টি বিপরীতমুখী বক্তব্যকে সামনে এনে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নীরবতাও বিতর্ক বাড়িয়েছে।
দলের ভিতরে দ্বন্দ্ব
সম্প্রতি কুনাল ঘোষ কয়েকজন শিল্পীকে বয়কট করার আহ্বান জানিয়েছেন। এই শিল্পীরা এর আগে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন। অন্যদিকে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্টতই শিল্পীদের স্বাধীনতার পক্ষে সুর চড়িয়েছেন। এই দ্বিমুখী মন্তব্য দলীয় অভ্যন্তরে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে।
একটি সূত্র জানিয়েছে, “যদি কুনাল ঘোষ দলের মুখপাত্র হন এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সাধারণ সম্পাদক, তবে এতো বিপরীতমুখী অবস্থান কেন? কার কথা দল মেনে চলবে?”
মুখ্যমন্ত্রীর নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন
এই বিতর্কের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখনও পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেননি। তার এই নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। অনেকের মতে, দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে তার হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
একজন বিশ্লেষক বলেন, “যখন দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে এমন দ্বিধা, তখন মুখ্যমন্ত্রীর নীরবতা সমস্যা বাড়াচ্ছে। তার বক্তব্য এই পরিস্থিতি পরিষ্কার করতে পারে।”
শিল্পীদের বয়কট: স্বাধীনতার উপর আঘাত?
শিল্পীদের বয়কটের প্রস্তাব অনেকেই সমালোচনা করেছেন। শিল্পী ও বুদ্ধিজীবী মহল থেকে দাবি উঠেছে, এটি তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর আঘাত।
একজন বিশিষ্ট শিল্পী বলেন, “গণতান্ত্রিক দেশে প্রতিবাদের অধিকার থাকা উচিত। যারা মতপ্রকাশ করছেন, তাদের চুপ করানো অগণতান্ত্রিক।”
সরকারের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ
কুনাল ঘোষের মন্তব্যের ভিত্তিতে অনেকে সন্দেহ করছেন, সরকার এই বয়কট উদ্যোগে পরোক্ষভাবে জড়িত কিনা। সমালোচকরা সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করার দাবি তুলেছেন।
পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেবে?
এই বিতর্কে সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া মিশ্র। অনেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থানকে সাধুবাদ জানিয়েছেন, আবার অনেকে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলাকে সমালোচনা করেছেন।
এখন সকলের চোখ মুখ্যমন্ত্রীর দিকে। তিনি কি এই বিতর্ক নিয়ে মুখ খুলবেন? তৃণমূল কি তাদের অভ্যন্তরীণ বিভ্রান্তি মিটিয়ে ঐক্য বজায় রাখতে পারবে? এই প্রশ্নগুলির উত্তর নির্ভর করছে ভবিষ্যতের ঘটনাপ্রবাহের উপর।