দিল্লি, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫: দিল্লি বিধানসভায় গণতন্ত্রের উপর আরেকটি আঘাত হানা হয়েছে। আজ, ২৭ ফেব্রুয়ারি, তিন দিনের জন্য সাসপেন্ড হওয়া ২১ জন AAP বিধায়ককে বিধানসভা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন বিরোধী দলনেত্রী আতিশি, যিনি এই পদক্ষেপকে "অগণতান্ত্রিক এবং সংবিধানবিরোধী" বলে অভিহিত করেছেন।
কী ঘটেছে?
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি, বিধানসভার স্পিকার বিজেন্দ্র গুপ্তা ২১ জন AAP বিধায়ককে তিন দিনের জন্য সাসপেন্ড করেন। এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কারণ তারা লেফটেন্যান্ট গভর্নর বিনয় কুমার সাক্সেনার উদ্বোধনী ভাষণের সময় "জয় ভীম" স্লোগান দিয়ে এবং প্ল্যাকার্ড দেখিয়ে বাধা সৃষ্টি করেছিলেন। AAP-এর দাবি, তারা এই প্রতিবাদ করেছিল কারণ বিজেপি সরকার মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ড. বি.আর. আম্বেদকর এবং ভগৎ সিং-এর ছবি সরিয়ে ফেলেছে—যা তাদের কাছে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের অবমাননা।
আজ, সাসপেন্ড করা বিধায়করা যখন বিধানসভায় প্রবেশের চেষ্টা করেন, তখন নিরাপত্তারক্ষীরা স্পিকারের নির্দেশের কথা বলে তাদের বাধা দেয়। এর প্রতিবাদে, আতিশির নেতৃত্বে বিধায়করা বিধানসভা মেট্রো স্টেশনের কাছে প্রবেশদ্বারের বাইরে ধরনায় বসেন এবং স্লোগান দেন।
AAP-এর অবস্থান
আতিশি বলেছেন, "এমনকি সংসদেও, সাসপেন্ড করা সদস্যদের প্রাঙ্গণের ভিতরে প্রতিবাদের অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু দিল্লি বিধানসভায় এই অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এটা গণতন্ত্রের হত্যা।" AAP সমর্থকরা মনে করেন, এটি বিজেপির একটি ষড়যন্ত্র, যারা আম্বেদকর ও ভগৎ সিং-এর আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধা না রেখে ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। তারা আরও বলছেন, এই ঘটনা AAP-কে দমিয়ে রাখার আরেকটি প্রয়াস।
বিজেপির প্রতিক্রিয়া
বিজেপি বিধায়করা AAP-এর আচরণকে "ভুল" বলে সমালোচনা করেছেন এবং তাদের "মনোভাব পরিবর্তন" করার পরামর্শ দিয়েছেন। তারা CAG রিপোর্টের উল্লেখ করে বলেছেন, AAP-এর আবগারি নীতির কারণে সরকারের বিপুল আর্থিক ক্ষতি হয়েছে, যা তাদের দুর্নীতির প্রমাণ। কিন্তু AAP সমর্থকরা এই অভিযোগকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হিসেবে দেখছেন।
পরবর্তী পদক্ষেপ
AAP এই ঘটনার প্রতিবাদে ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি লিখেছে, যা রাজনৈতিক উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। সমর্থকরা বলছেন, "আমরা লড়াই চালিয়ে যাব। গণতন্ত্র ও সংবিধানের জন্য আমাদের কণ্ঠস্বর দমানো যাবে না।"AAP-এর দৃষ্টিকোণ থেকে, এটি কেবল একটি প্রতিবাদ নয়, বরং গণতান্ত্রিক অধিকার ও আদর্শ রক্ষার লড়াই। দিল্লির রাজনীতিতে এই সংঘাত কীভাবে এগিয়ে যায়, তা দেখার জন্য সমর্থকরা অপেক্ষায় রয়েছেন।