" " //psuftoum.com/4/5191039 Live Web Directory আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস: একুশে ফেব্রুয়ারির ইতিহাস, তাৎপর্য ও প্রাসঙ্গিকতা //whairtoa.com/4/5181814
Type Here to Get Search Results !

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস: একুশে ফেব্রুয়ারির ইতিহাস, তাৎপর্য ও প্রাসঙ্গিকতা

 



একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালি জাতির জন্য এক অনন্য গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৫২ সালের এই দিনে বাংলার মানুষ রক্ত দিয়েছিল। এই আত্মত্যাগের ফলে বাংলা ভাষা কেবল রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পায়নি, বরং এটি বাঙালির জাতীয় আন্দোলন এবং স্বাধীনতার পথ প্রশস্ত করেছিল।

ভাষা আন্দোলনের সূচনা

ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠার পরপরই। পাকিস্তান সরকার উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার সিদ্ধান্ত নেয়, যা পূর্ব বাংলার মানুষ কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঘোষণা করেন, “উর্দু এবং শুধুমাত্র উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা।” এর প্রতিবাদে পূর্ব বাংলায় প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।

১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান গণপরিষদে ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানান। কিন্তু তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়। এরপরই বাংলার মানুষ একে তাদের সাংস্কৃতিক অধিকার এবং মর্যাদার ওপর আঘাত হিসেবে বিবেচনা করে।

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঘটে এক ঐতিহাসিক ঘটনা। সেদিন ঢাকার রাজপথে ভাষার অধিকারের দাবিতে মিছিলে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন রফিক, সালাম, বরকত, জব্বার এবং আরও অনেকে। তাদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৫৬ সালে বাংলা পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পায়।

আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

বাংলা ভাষার প্রতি বাঙালির ভালোবাসা এবং আত্মত্যাগ শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বব্যাপী উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ২০০০ সাল থেকে এই দিনটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মাতৃভাষার সংরক্ষণ এবং উন্নয়নের গুরুত্ব তুলে ধরতে উদযাপিত হচ্ছে।

একুশে ফেব্রুয়ারির তাৎপর্য

একুশে ফেব্রুয়ারি কেবল ভাষা আন্দোলনের দিন নয়; এটি বাঙালির জাতীয় চেতনা, সংস্কৃতি এবং অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতীক। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় ভাষা এবং সংস্কৃতি মানুষের পরিচয় এবং আত্মপরিচয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

বর্তমান প্রাসঙ্গিকতা

বর্তমান বিশ্বে প্রযুক্তির বিকাশ এবং ভাষার মিশ্রণের কারণে অনেক মাতৃভাষা বিলুপ্তির পথে। ইউনেস্কোর তথ্য অনুযায়ী, প্রতি দুই সপ্তাহে একটি ভাষা বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মাধ্যমে আমরা এই বার্তাটি পাই যে, প্রত্যেক জাতির মাতৃভাষা রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি।

উদযাপন

বাংলাদেশে প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে উদযাপিত হয়। সারাদেশের মানুষ শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের স্মরণ করেন। বিশেষ করে স্কুল, কলেজ এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং রচনা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দিনটি উদযাপন করা হয়।

উপসংহার

একুশে ফেব্রুয়ারি কেবল অতীতের একটি ঘটনা নয়, এটি আমাদের জীবনে প্রেরণার উৎস। এটি আমাদের শেখায় মাতৃভাষা এবং সংস্কৃতির মর্যাদা রক্ষার জন্য লড়াই করতে। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে আমাদের দায়িত্ব, ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধা জানিয়ে মাতৃভাষার প্রসার এবং সংরক্ষণের জন্য কাজ করা।


Top Post Ad

Below Post Ad

Hollywood Movies