" " //psuftoum.com/4/5191039 Live Web Directory থাইল্যান্ডে সাইবার প্রতারণার ভয়ংকর শ্রম শিবির: আটকা হাজারো জীবন! //whairtoa.com/4/5181814
Type Here to Get Search Results !

থাইল্যান্ডে সাইবার প্রতারণার ভয়ংকর শ্রম শিবির: আটকা হাজারো জীবন!

 


মে সট, থাইল্যান্ড – ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ – থাইল্যান্ড-মায়ানমার সীমান্তে একটি ভয়াবহ মানব পাচার ও শোষণের জাল উন্মোচিত হয়েছে। সাইবার প্রতারণার নামে গড়ে ওঠা শ্রম শিবিরগুলোতে হাজার হাজার মানুষকে বন্দি করে রাখা হচ্ছে, যেখানে তাদের জোর করে অনলাইন জালিয়াতির কাজে লাগানো হচ্ছে। এই অবৈধ কার্যক্রমের শিকড় এতটাই গভীর যে থাইল্যান্ড, মায়ানমার ও চীনের কর্তৃপক্ষ এখন একযোগে এর বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) থাইল্যান্ডের সহায়তায় ২০০ চীনা নাগরিককে মায়ানমারের মিয়াওয়াদি অঞ্চল থেকে উদ্ধার করে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এই দলটি সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে মুক্ত হওয়া ১,০০০-এর বেশি মানুষের একটি অংশ। তবে এখনও হাজার হাজার মানুষ এই নরককুণ্ডে আটকা পড়ে আছে।
প্রতারণার ফাঁদে জীবন

এই শ্রম শিবিরগুলো অপরাধী চক্র দ্বারা পরিচালিত হয়। তারা লোভনীয় চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে মানুষকে ফাঁদে ফেলে। অনেকে, যেমন চীনা অভিনেতা ওয়াং জিং, যিনি গত জানুয়ারিতে অপহরণের পর বিশ্বব্যাপী শিরোনাম হয়েছিলেন, ভালো কাজের আশায় থাইল্যান্ডে আসেন। কিন্তু তাদের সীমান্ত পার করে মায়ানমারে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সশস্ত্র পাহারায় শিবিরে বন্দি করা হয়। সেখানে তাদের জোর করে প্রেমের ভান, জাল বিনিয়োগ প্রকল্প এবং অবৈধ জুয়ার মাধ্যমে প্রতারণা চালাতে বাধ্য করা হয়। এই কারবার থেকে বছরে কোটি কোটি টাকা আয় হয়।
যারা বেঁচে ফিরেছেন, তাদের গল্প শুনলে শিউরে উঠতে হয়। গত সপ্তাহে ফেরত আসা ২৬০ জনের দেহে দেখা গেছে মারধর আর বিদ্যুৎ শকের চিহ্ন। এক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তি বলেন, “এটা ছিল দুঃস্বপ্ন। আমাদের মারা হতো, আটকে রাখা হতো। টাকা না এনে দিলে মুক্তি ছিল না।”
জাতিসংঘের হিসেবে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, আফ্রিকা ও অন্যান্য অঞ্চল থেকে লাখো মানুষ এই ফাঁদে পড়েছে। থাইল্যান্ডের মানব পাচার বিরোধী সংস্থা জানিয়েছে, শুধু মায়ানমারের সীমান্তে এখনও প্রায় ১০,০০০ মানুষ আটকা থাকতে পারে।
অভিযানে গতি

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পায়েটংটার্ন শিনাওয়াত্রা চীন সফরের সময় এই অপরাধ নির্মূলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। চীন ও মায়ানমারের কারেন বর্ডার গার্ড ফোর্সের সঙ্গে মিলে থাইল্যান্ড এখন শিবিরগুলোর বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট ও জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। শ্বে কোক্কোর মতো ক্যাসিনো-শিবির এখন অন্ধকারে।
কারেন বাহিনী ১০,০০০ মানুষকে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে। প্রতিদিন শত শত মানুষ ফিরছে। থাই পুলিশ ভুক্তভোগীদের আলাদা করছে, তবে এত বিশাল সংখ্যা নিয়ে কাজটি কঠিন। চীন ইতিমধ্যে ১,০০০-এর বেশি নাগরিককে ফিরিয়ে নিয়েছে।

আঞ্চলিক সংকট

মায়ানমারে ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে এই অঞ্চল অরাজকতায় ডুবে আছে। মাদক পাচার ও জুয়ার সঙ্গে জড়িত গ্যাংগুলো এই সুযোগে শিবির গড়েছে। ইংরেজি, চীনা ও অন্যান্য ভাষায় দক্ষ কর্মীদের দিয়ে তারা বিশ্বব্যাপী প্রতারণা চালাচ্ছে।
ওয়াং জিং-এর ঘটনা এই অপরাধের নৃশংসতা ফুটিয়ে তুলেছে। তাকে উদ্ধারের পর থাইল্যান্ড ভিসা ও ব্যাংকিং নিয়ম কঠোর করেছে। তবু অপরাধীরা এখন কম্বোডিয়ার দিকে ঝুঁকছে।
আশার আলো?

থাই-মায়ানমার ফ্রেন্ডশিপ ব্রিজে সৈন্যদের পাহারায় বাসে বাসে মানুষ ফিরছে। তবে এই সংকট দূর করতে এখনও অনেক পথ বাকি। আধুনিক দাসপ্রথা আর প্রযুক্তির এই ভয়ংকর মিশ্রণ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Top Post Ad

Below Post Ad

Hollywood Movies