দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের পর দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) রেখা গুপ্তাকে দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করেছে। ৫০ বছর বয়সী রেখা গুপ্তা প্রথমবারের মতো বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন এবং তিন মেয়াদে পৌর কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি অতিষী,সুশমা স্বরাজ,শীলা দীক্ষিতের মতো নেতৃত্বের লাইনে চতুর্থ নারী হিসেবে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পেলেন।
রেখা গুপ্তার এই নিযুক্তি বিজেপির জন্য একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। নারী নেতৃত্ব ও নারীদের ক্ষমতায়নের প্রতিই জোর দিয়েছে দলটি। গুপ্তা তার নির্বাচনী প্রচারে নারী কল্যাণ ও উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন, যা বিজেপির নির্বাচনী কৌশলের একটি বড় অংশ ছিল। তার নেতৃত্বে দিল্লির নারীদের জন্য আর্থিক সহায়তা ও অন্যান্য প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচনে রেখা গুপ্তা তার প্রতিদ্বন্দ্বীকে বড় ব্যবধানে পরাজিত করে জয়ী হন। উত্তর পিতামপুরার পৌর কাউন্সিলর হিসেবে তার অভিজ্ঞতা এবং স্থানীয় সমস্যাগুলো নিয়ে কাজ করার দক্ষতা তাকে এই পদে এনে দিয়েছে। তার স্থানীয় সংযোগ ও জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের ক্ষমতা দিল্লির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে রেখা গুপ্তার সামনে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বিজেপির নির্বাচনী ইশতেহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন, বিশেষ করে নারীদের জন্য আর্থিক সহায়তা এবং দিল্লির সামাজিক-অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানে তার নেতৃত্বের দক্ষতা পরীক্ষা হবে। এছাড়াও, দিল্লির মতো একটি জটিল ও রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় শহরে শাসন পরিচালনা করতে গিয়ে তাকে নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে।
রেখা গুপ্তা বিজেপির দিল্লি শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, যা তাকে দলের অভ্যন্তরে জোট গঠন ও নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা দিয়েছে। তার এই দক্ষতা দলের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখতে এবং নীতিনির্ধারণে সহায়ক হবে।
রেখা গুপ্তার নেতৃত্ব বিজেপির জন্য দিল্লি এবং অন্যান্য শহুরে এলাকায় দলের কৌশলগত পরিবর্তন আনতে পারে। তার সাফল্য বিজেপিতে আরও নারী নেতৃত্বের পথ প্রশস্ত করতে পারে এবং দলের ইমেজ ও নির্বাচনী কৌশলে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।
রেখা গুপ্তার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্তি বিজেপির জন্য একটি ঐতিহাসিক ও কৌশলগত সিদ্ধান্ত। তার নেতৃত্বে দিল্লির উন্নয়ন ও নারী ক্ষমতায়নের নতুন অধ্যায় শুরু হতে চলেছে। তবে, তার সামনে চ্যালেঞ্জও কম নয়। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ এবং দিল্লির জটিল সমস্যা সমাধানে তার সাফল্য বিজেপির ভবিষ্যৎ কৌশলকে নতুন দিশা দিতে পারে।