২০২১ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি। কলকাতার রাজপথে ভিড় জমিয়েছিলো লক্ষ তরুণ-তরুণী। কাজের দাবি, ন্যায্য অধিকার এবং এক সমতার সমাজের স্বপ্ন নিয়ে, তারা অংশ নিয়েছিলো ঐতিহাসিক নবান্ন অভিযানে। সেদিনের প্রতিবাদী স্রোতের মধ্যে ছিলেন আমাদের কমরেড মইদুল ইসলাম মিদ্দা—যিনি ছিলেন এক সাধারণ গরিব পরিবারের ছেলে, কিন্তু স্বপ্ন ছিলো অসাধারণ।
কিন্তু সেদিনই ঘটে যায় ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়। পুলিশের বেপরোয়া লাঠিচার্জ, ক্ষমতার দম্ভ আর গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের বর্বরতায় লুটিয়ে পড়েন মইদুল। মাথায় গুরুতর আঘাত নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। দীর্ঘ চার দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে, ১৫ই ফেব্রুয়ারি, আমাদের এই তরুণ লড়াকু কমরেড চিরতরে বিদায় নেন।
মইদুলের মৃত্যু যেন এক ক্ষোভের অগ্নি হয়ে ছড়িয়ে পড়ে সারা বাংলায়। নবান্ন অভিযানের এই শহীদ আমাদের মনে করিয়ে দেয়, যুবসমাজের কাজের অধিকার কেড়ে নেওয়া এবং প্রতিবাদীদের দমন করার প্রচেষ্টা কতটা নির্মম হতে পারে।
আজ ২০২৫ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি। মইদুলের মৃত্যুর চার বছর পেরিয়ে গেলেও তাঁর লড়াইয়ের চেতনা আজও জীবিত। প্রতিদিন যেখানে বেকারত্ব বাড়ছে, রাষ্ট্রীয় দমনপীড়ন বাড়ছে, সেখানে মইদুলের আত্মত্যাগ আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে লড়াই কখনো বৃথা যায় না। যুবসমাজের প্রতিটি দাবি, প্রতিটি কণ্ঠ যেন তাঁর স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখে।
মইদুল ইসলাম মিদ্দার রক্তে সেদিন যে প্রতিরোধের আগুন জ্বলেছিলো, তা আজও পথ দেখায়। তাঁর জীবন ও মৃত্যু আমাদের শিখিয়েছে যে অধিকার আদায়ের লড়াইয়ের পথে কোনো বাধাই চূড়ান্ত নয়।
নবান্ন অভিযানের সেই দিন আর মইদুলের আত্মত্যাগ আমাদের শপথ করায়—কাজ, অধিকার আর ন্যায়ের জন্য লড়াই চলবে। মইদুলের আত্মা যেন আমাদের সকল লড়াইয়ে প্রেরণা দেয়।
মইদুল তুমি অমর। তোমার লড়াই আমাদের শক্তি।