সিপিআইএমের সম্মেলন মানেই শ্রম, ত্যাগ, আর মানুষের প্রতি নিঃস্বার্থ ভালবাসার এক মেলবন্ধন। অথচ, এই আন্তরিকতাকে আড়াল করতে, বিভেদের রাজনীতি আবারও মাথা চাড়া দিচ্ছে। বলা হচ্ছে, সম্মেলনের প্রতিনিধিদের খাবার আর কর্মীদের খাবারের মধ্যে তফাৎ রয়েছে। রাজভোগ-রাবড়ি আর পান্তাভাতের ফারাক টানার চেষ্টা চলছে। কিন্তু যারা কমিউনিস্ট পার্টির মাটি থেকে উঠে আসা বাস্তবতা জানেন, তারা বুঝবেন—এটা একটা নিছক মিথ্যে গল্প।
সত্যিটা অন্য। সম্মেলনে যেই খাবারই থাকুক না কেন, তা আসে সেই এলাকার অভ্যর্থনা কমিটির অক্লান্ত পরিশ্রম আর এলাকার মানুষজনের ছোট ছোট অবদানের হাত ধরে। কোনো বড়সড় বাজেট নেই, নেই বিলাসের আয়োজন। বরং এলাকাভিত্তিক কর্মী-সমর্থকদের খেটে যাওয়া হাত, ঘামঝরা দিন, আর মানুষের ভালবাসাই এই আয়োজনের ভিত্তি।
যে অভ্যর্থনা কমিটির সদস্যরা সকাল থেকে রাত এক করে খাবার পরিবেশন করেন, তাদের অনেকেই হয়তো শেষমেশ একগ্লাস জল খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। তবুও, তাদের মুখে ক্লান্তির ছাপ নেই। কারণ এ কাজটা শুধু দায়িত্ব নয়, এটা পরিবারের জন্য কিছু করার আনন্দ।
এটাই সিপিআইএম। পার্টির নেতা থেকে কর্মী, সবাই এক সারিতে বসে পান্তাভাত খাওয়ার সংস্কৃতি লালন করেন। কেউ ভুখা পেটে ফিরে যায় না। ব্রিগেডের মতো বড় সমাবেশেও কারও কাছে খাবার না থাকলে, পাশে বসা মানুষ নিজের খাবারের থালা এগিয়ে দেয়। এই সাম্য আর মানবিকতাই তো সিপিআইএমকে আলাদা করে তোলে।
তাই যখন বাজারি মিডিয়া বিভেদ ছড়ানোর চেষ্টা করে, আমরা জানি—ওরা জানে না, কমিউনিস্ট পার্টি করতে গেলে পাঁজরের জোর লাগে। কাঁচা লঙ্কা দিয়ে পান্তাভাত খাওয়ার অভ্যাস আর মুড়ি-ছোলা খেয়েও সারাদিন কাজ করার মানসিকতা ছাড়া এই পার্টি সম্ভব নয়।
এই পার্টি শুধু নীতির নয়, মানুষের। এখানে সংগ্রামের শক্তি আসে মানুষের জন্য, মানুষের সাথে থাকার শপথ থেকে।ভাতের লড়াই আরও শক্তিশালী করুন। আসুন সেই লড়াইয়ে, যেখানে ভুখা পেটের জন্য লড়াই করাই সবচেয়ে বড় পরিচয়।