২ মার্চ ২০২৫: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়ির নিচে এক বিক্ষোভকারী ছাত্রের চাপা পড়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যজুড়ে ছাত্র বিক্ষোভ তীব্র আকার ধারণ করেছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে বিভিন্ন জেলায় ছাত্র সংগঠনগুলির আন্দোলনের মধ্যে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে বর্ধমানে এসএফআই (স্টুডেন্টস ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া)-এর বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের আক্রমণে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
বর্ধমানে রবিবার সকালে এসএফআই-এর একটি প্রতিবাদ মিছিল চলাকালীন পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী আহত হয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, পুরুষ পুলিশ সদস্যরা নির্মমভাবে কয়েকজন ছাত্রীর উপর আক্রমণ করেছেন। আহতদের মধ্যে এসএফআই-এর জেলা সভাপতি প্রবীর ভৌমিক সহ জেলার ছাত্র আন্দোলনের বহু কর্মী রয়েছেন, যাঁরা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
যাদবপুরের ঘটনার সূত্রপাত গত শনিবার, যখন তৃণমূলপন্থী অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপার বৈঠকে যোগ দিতে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছন। ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলি বিক্ষোভ শুরু করে এবং মন্ত্রীর গাড়ি ঘিরে ফেলে। এই সময় এক ছাত্র গাড়ির নিচে চাপা পড়ে গুরুতর আহত হন বলে অভিযোগ। এরপর থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে।
বর্ধমানে এসএফআই-এর জেলা সম্পাদক ঊষশী রায়চৌধুরীর নেতৃত্বে মিছিলটি বর্ধমান স্টেশন থেকে কার্জন গেটের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। এসএফআই-এর দাবি, শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত এবং যাদবপুরে তাঁদের কর্মীদের উপর হামলার বিচার হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু মিছিলে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। আহত ছাত্রীদের একজন জানিয়েছেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করছিলাম, কিন্তু পুলিশ অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। এটা গণতন্ত্রের উপর আঘাত।”
এদিকে, তৃণমূলের তরফে পাল্টা দাবি করা হয়েছে যে বিক্ষোভকারীরা শিক্ষামন্ত্রীকে হেনস্থা করেছে এবং তাঁর গাড়িতে হামলা চালিয়েছে। তৃণমূল নেতা অরূপ বিশ্বাস বলেন, “যারা শিক্ষক ও মন্ত্রীর উপর হাত তোলে, তারা ছাত্র নয়। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, কিন্তু এই অশান্তি মেনে নেওয়া যায় না।”
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তাদের বাধ্য হয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হয়েছে। তবে ছাত্র সংগঠনগুলি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে এবং আরও বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে। রাজ্যের শিক্ষা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠছে।