ট্রাম্প প্রশাসনের চাপে কোস্টারিকা ও পানামায় ভারতীয় অভিবাসীদের নারকীয় অবস্থা
প্রকাশিত: ৬ মার্চ, ২০২৫
ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসন নীতির ফলে পানামা এবং কোস্টারিকার মতো দেশগুলোকে অবৈধ অভিবাসীদের জন্য অস্থায়ী আশ্রয় হিসেবে ব্যবহার করতে বাধ্য করা হয়েছে। এই নীতির আওতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে নির্বাসিত ভারতীয় নাগরিকরা এখন এই দুই দেশে অমানবিক পরিস্থিতিতে দিন কাটাচ্ছেন। স্যাংশন বা শুল্ক আরোপের হুমকির মুখে পড়ে এই দেশগুলো অভিবাসীদের গ্রহণ করলেও, তাদের জীবনযাত্রার অবস্থা নিয়ে উঠেছে গুরুতর অভিযোগ।
হাতকড়া ও 'সন্ত্রাসী' তকমা
কোস্টারিকায় পৌঁছানোর পর ভারতীয় অভিবাসীদের হাতকড়া ও শিকল অবিলম্বে খোলা হয়নি। এমনকি নিরাপত্তা কর্মীরা তাদের 'সন্ত্রাসী' হিসেবে আখ্যা দিয়েছে বলে জানা গেছে। একজন নির্বাসিত ব্যক্তি বলেন, "আমরা ভালো জীবনের আশায় এসেছিলাম, কিন্তু এখানে আমাদের সাথে পশুর মতো ব্যবহার করা হচ্ছে।"
রুটি আর দূষিত জল দিয়ে দিন কাটছে
পানামা এবং কোস্টারিকার আটক কেন্দ্রে এই অভিবাসীদের দিনে দুবার শুধু রুটি দেওয়া হচ্ছে। পানীয় হিসেবে তাদের দূষিত ট্যাপের জল পান করতে হচ্ছে, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে। "এভাবে বেঁচে থাকা অসম্ভব," বলছেন একজন অভিবাসী।
পানামায় জঙ্গলের মাঝে আটক
পানামায় প্রথমে অভিবাসীদের ডেকাপোলিস হোটেলে রাখা হয়েছিল। যারা ভারতে ফিরতে অস্বীকার করেছেন, তাদের পাঠানো হয়েছে ডারিয়েন গ্যাপের জঙ্গলের মাঝে একটি আটক কেন্দ্রে। এই প্রত্যন্ত এলাকায় কোনো যোগাযোগ বা আইনি সহায়তা নেই, এবং প্রকৃতির কাছে তারা অরক্ষিত।
নিজের খরচে দেশে ফেরার চাপ
কোস্টারিকায় অভিবাসীদের বলা হচ্ছে, তাদের নিজেদের টাকায় ভারতে ফিরতে হবে। কর্তৃপক্ষের দাবি, এরা যুক্তরাষ্ট্রে মোটেল ও দোকানের মালিক ছিলেন, তাই তাদের টাকা আছে। কিন্তু অভিবাসীরা বলছেন, "আমাদের কাছে একটা পয়সাও নেই। আমাদের জীবন উৎখাত করা হয়েছে।"
ছাদবিহীন আটক কেন্দ্র
কোস্টারিকার আটক কেন্দ্রগুলোর অবস্থা আরও ভয়াবহ। এখানে ছাদ পর্যন্ত নেই, ফলে বৃষ্টি ও রোদে অভিবাসীরা অসহায়। মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই পরিস্থিতিকে "মানবতার কলঙ্ক" হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক সমালোচনা
ট্রাম্প প্রশাসনের এই নীতি ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। পানামা ও কোস্টারিকার মতো ছোট দেশগুলো অভিবাসীদের জন্য প্রস্তুত নয়, তবু যুক্তরাষ্ট্রের চাপে তারা এই দায়িত্ব নিতে বাধ্য হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি অভিবাসীদের অধিকার লঙ্ঘন এবং আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি অবজ্ঞা।