" " //psuftoum.com/4/5191039 Live Web Directory ইতিহাসের পাতা থেকে: ১৯৬৪ সালের ৭ম পার্টি কংগ্রেস সিপিআই(এম)-এর গঠন এবং নতুন প্রোগ্রামের সূচনা //whairtoa.com/4/5181814
Type Here to Get Search Results !

ইতিহাসের পাতা থেকে: ১৯৬৪ সালের ৭ম পার্টি কংগ্রেস সিপিআই(এম)-এর গঠন এবং নতুন প্রোগ্রামের সূচনা

Top Post Ad

 

ইতিহাসের পাতা থেকে: ১৯৬৪ সালের ৭ম পার্টি কংগ্রেস
সিপিআই(এম)-এর গঠন এবং নতুন প্রোগ্রামের সূচনা



ভারতের বামপন্থী রাজনৈতিক আন্দোলনের ইতিহাসে ১৯৬৪ সালের ৭ম পার্টি কংগ্রেস একটি যুগান্তকারী ঘটনা। এই কংগ্রেসে কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া (সিপিআই)-এর অভ্যন্তরীণ মতাদর্শগত এবং সংগঠনিক বিভাজনের পর কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া (মার্কসবাদী) বা সিপিআই(এম)-এর প্রতিষ্ঠা হয়। পার্টি কংগ্রেসে গৃহীত নতুন প্রোগ্রাম ভারতের রাষ্ট্র কাঠামোকে একটি বুর্জোয়া এবং জমিদার শ্রেণির শাসনের অঙ্গ হিসেবে চিহ্নিত করে, যেখানে বড় বুর্জোয়া শ্রেণি বিদেশি পুঁজি সহযোগে নেতৃত্ব প্রদান করছে।

বিভক্তির প্রেক্ষাপট

১৯৬০-এর দশকের প্রথম দিকে সিপিআই-এর মধ্যে মতাদর্শগত ভিন্নতা ক্রমশ বৃদ্ধি পায়। ভারতের বুর্জোয়া শ্রেণি এবং বিপ্লবী রণকৌশল নিয়ে দ্বিমত সিপিআই এবং সিপিআই(এম)-এর মধ্যে বিভক্তির মূল কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

  • সিপিআই-এর অবস্থান: সিপিআই ভারতীয় বুর্জোয়া শ্রেণিকে "প্রগতিশীল" হিসেবে চিহ্নিত করেছিল এবং তাদের জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লবের নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্য বলে মনে করেছিল।
  • সিপিআই(এম)-এর অবস্থান: সিপিআই(এম) এই দৃষ্টিভঙ্গি প্রত্যাখ্যান করে। তাদের মতে, ভারতীয় বুর্জোয়া শ্রেণি প্রতিক্রিয়াশীল এবং বিদেশি পুঁজির সহযোগে শোষণমূলক ব্যবস্থা বজায় রাখতে আগ্রহী।

এই মতাদর্শগত বিভাজন ১৯৬২ সালের চীন-ভারত যুদ্ধ এবং আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট আন্দোলনে মতপার্থক্যের মাধ্যমে আরও তীব্র হয়।

৭ম পার্টি কংগ্রেস: মূল সিদ্ধান্তসমূহ

১. সিপিআই(এম)-এর গঠন:
১৯৬৪ সালের ৭ম পার্টি কংগ্রেসে সিপিআই(এম)-এর প্রতিষ্ঠা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়। এই পার্টি একটি নতুন বিপ্লবী প্রোগ্রাম গ্রহণ করে, যা সিপিআই-এর তুলনায় অনেক বেশি র‌্যাডিকাল ছিল। সিপিআই(এম) ভারতের রাষ্ট্র কাঠামোকে বুর্জোয়া এবং জমিদার শ্রেণির দ্বারা পরিচালিত শাসনব্যবস্থা হিসেবে চিহ্নিত করে।

২. নতুন প্রোগ্রামের গ্রহণ:
পার্টি কংগ্রেস একটি "জনগণের গণতান্ত্রিক বিপ্লব" (People’s Democratic Revolution) এর ডাক দেয়। এই বিপ্লবের নেতৃত্ব দেবে শ্রমিক শ্রেণি এবং এর ভিত্তি হবে শ্রমিক-কৃষক মৈত্রী।

৩. নেতৃত্ব নির্বাচন:
কংগ্রেসে ৩১ সদস্যের একটি সেন্ট্রাল কমিটি এবং ৯ সদস্যের একটি পলিট ব্যুরো গঠন করা হয়। কমরেড পুচলাপল্লি সুন্দরাইয়া সিপিআই(এম)-এর প্রথম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন। সুন্দরাইয়া সিপিআই(এম)-এর মতাদর্শগত কাঠামো এবং সংগঠনের ভিত্তি শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

৪. আন্তর্জাতিক অবস্থান:
৭ম পার্টি কংগ্রেস আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট আন্দোলনের "সংশোধনবাদী" প্রবণতাগুলিকে প্রত্যাখ্যান করে। সিপিআই(এম) ভারতের বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি স্বাধীন মার্কসবাদী-লেনিনবাদী পথ অনুসরণের উপর জোর দেয়।

বিপ্লবী কৌশল এবং শ্রেণিসংগ্রাম

সিপিআই(এম) তার নতুন প্রোগ্রামে জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লবের ধারণাকে বদলে "জনগণের গণতান্ত্রিক বিপ্লব" এর উপর গুরুত্ব দেয়। এই কৌশলের মূলনীতি:

  • শ্রমিক-কৃষক মৈত্রীর ভিত্তিতে একটি বামপন্থী জোট গঠন।
  • ভারতের জমিদারি ব্যবস্থার বিলোপ এবং ভূমি সংস্কারের মাধ্যমে কৃষকদের মুক্তি।
  • বৃহৎ বুর্জোয়া এবং বিদেশি পুঁজির প্রভাব দূরীকরণ।

ঐতিহাসিক গুরুত্ব

৭ম পার্টি কংগ্রেস ভারতের বামপন্থী রাজনীতিতে সিপিআই(এম)-এর স্বাধীন অবস্থান প্রতিষ্ঠা করে। এই কংগ্রেসের সিদ্ধান্তসমূহ পরবর্তী কয়েক দশকের জন্য সিপিআই(এম)-এর আদর্শিক দিশা নির্ধারণ করে।

সিপিআই(এম)-এর উত্তরাধিকার

১৯৬৪ সালের ৭ম পার্টি কংগ্রেস সিপিআই(এম)-এর রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক ভিত্তি স্থাপন করে। যদিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রোগ্রামে কিছু পরিবর্তন এসেছে, তবে শ্রমিক-কৃষক মৈত্রী এবং শ্রেণিসংগ্রামের উপর জোর দেওয়া সিপিআই(এম)-এর নীতির কেন্দ্রে রয়ে গেছে।

উপসংহার

৭ম পার্টি কংগ্রেস ভারতের বামপন্থী আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এটি শুধুমাত্র সিপিআই(এম)-এর প্রতিষ্ঠার সূচনা করেনি, বরং ভারতীয় রাজনীতিতে বামপন্থার একটি নতুন ধারা তৈরি করেছে। সিপিআই(এম)-এর এই ঐতিহাসিক প্রস্থান এখনও প্রাসঙ্গিক, বিশেষ করে যখন ভারত ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং সামাজিক অন্যায়ের মুখোমুখি।

#towardscpim24thpartycongress #CPIMXXIVPartyCongress

Below Post Ad

Hollywood Movies