" " //psuftoum.com/4/5191039 Live Web Directory পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের ১৪তম পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্মেলনে কি বললেন রাজ্য কমিটির্ কার্যকরী সভাপতি সত্যজিৎ চক্রবর্তী //whairtoa.com/4/5181814
Type Here to Get Search Results !

পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের ১৪তম পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্মেলনে কি বললেন রাজ্য কমিটির্ কার্যকরী সভাপতি সত্যজিৎ চক্রবর্তী

 



দুর্গাপুর শহরে আয়োজিত পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের ১৪তম পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্মেলনে কার্যকরী সভাপতি সত্যজিৎ চক্রবর্তী এক দীর্ঘ বক্তৃতায় বিজ্ঞানের চর্চা, বিজ্ঞানমনস্কতা গড়ে তোলা, এবং সমাজে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সুফল পৌঁছে দেওয়ার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, “প্রথম দিন থেকেই আমাদের লক্ষ্য ছিল রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তে বিজ্ঞান আন্দোলনকে ছড়িয়ে দেওয়া। এই লক্ষ্যে খ্যাতনামা বিজ্ঞানী ও সাধারণ মানুষের সহযোগিতায় আমরা একটি শক্তিশালী ভিত্তি গড়ে তুলেছি।”


তিনি এও উল্লেখ করেন যে, বিজ্ঞানের গজদন্ত মিনার থেকে বেরিয়ে এসে বিজ্ঞানকে সাধারণ মানুষের জীবনের অংশ করে তোলার কাজটি অত্যন্ত জরুরি। বিজ্ঞানকে শুধু গবেষণাগারে আটকে না রেখে মানুষের দৈনন্দিন জীবনে প্রাসঙ্গিক করে তোলার আহ্বান জানান তিনি।


বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রসার:


সত্যজিৎ চক্রবর্তী বলেন, "বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি আমাদের জীবনে যে সুফল এনে দিয়েছে, তা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া জরুরি। তবে বর্তমান সময়ে বিজ্ঞান গবেষণা ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যে অব্যবস্থাপনা এবং আর্থিক সংকোচন দেখা যাচ্ছে, তা গভীর উদ্বেগজনক। গবেষণাগারে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দের অভাব এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে বৈষম্য বিজ্ঞান চর্চার অগ্রগতিকে বাঁধা দিচ্ছে।"



তিনি বর্তমান জাতীয় শিক্ষানীতির প্রসঙ্গ তুলে কড়া সমালোচনা করেন। তার মতে, নতুন শিক্ষানীতির কারণে বিজ্ঞান শিক্ষার মৌলিকত্ব ও বিজ্ঞানমনস্কতা তৈরি করার কাজ পিছিয়ে পড়ছে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ কমছে এবং তারা অপবিজ্ঞান ও কুসংস্কারে বেশি ঝুঁকছে।


সমাজে বিজ্ঞানমনস্কতার প্রসার:


সমাজে যুক্তিবাদী চিন্তা এবং বিজ্ঞান মনস্ক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরির প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে সত্যজিৎ চক্রবর্তী বলেন, “একটা সময়ে আমাদের রাজ্যের খ্যাতনামা বিজ্ঞানীরা বিজ্ঞান ও যুক্তিকে মানুষের মধ্যে প্রতিষ্ঠা করতে নিরলসভাবে কাজ করেছেন। কিন্তু বর্তমান সময়ে আমরা দেখছি, বিজ্ঞানবিরোধী শক্তি আমাদের সমাজকে বিভ্রান্ত করতে অপবিজ্ঞান এবং কুসংস্কারের প্রসার ঘটাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বিজ্ঞান আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।”



তিনি আরও বলেন, “তরুণ প্রজন্মকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য বিজ্ঞান শিক্ষাকে আরও সহজ এবং আকর্ষণীয় করতে হবে। বিজ্ঞান শিক্ষা শুধুমাত্র পাঠ্যপুস্তকের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে, সেটিকে বাস্তব জীবনের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।”


জাতীয় শিক্ষানীতির সমালোচনা:


জাতীয় শিক্ষানীতির প্রসঙ্গে সত্যজিৎ চক্রবর্তী বলেন, “এই শিক্ষানীতিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির চর্চার ক্ষেত্র সংকুচিত করা হয়েছে। এমনকি গবেষণা ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত শিল্পপতিদের আধিপত্য বাড়ছে। তারা তাদের ব্যবসায়িক চাহিদা অনুযায়ী গবেষণার দিশা নির্ধারণ করছে, যা বিজ্ঞান চর্চার স্বাধীনতাকে বিপন্ন করছে।”


তিনি আরও উল্লেখ করেন, "জাতীয় রিসার্চ ফাউন্ডেশনের মতো সংস্থাগুলির মাধ্যমে গবেষণা ক্ষেত্রকে নিয়ন্ত্রণ করার যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এতে গবেষণার স্বাধীনতা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, এবং বিজ্ঞানীরা চাপের মুখে পড়ছেন। এমনকি আইআইটি-র মতো প্রতিষ্ঠানের ক্যালেন্ডারেও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।"


মহিলা ও তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণ:


সম্মেলনে মহিলাদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং তরুণ প্রজন্মের উৎসাহিত উপস্থিতি প্রসঙ্গে সত্যজিৎ চক্রবর্তী সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “গত বছরের তুলনায় এ বছর তরুণ প্রজন্মের ছাত্র-ছাত্রী এবং মহিলাদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। এই অংশগ্রহণই প্রমাণ করে যে, বিজ্ঞান আন্দোলনের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। ভবিষ্যতে এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেবে তরুণ প্রজন্ম।”



সমাজ ও শিক্ষার দায়িত্ব:


সমাজে বিজ্ঞানমনস্ক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে শিক্ষার ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, "বিজ্ঞানকে জীবনের প্রতিটি স্তরে যুক্ত করতে হবে। প্রাথমিক স্তর থেকেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিজ্ঞান শিক্ষার প্রতি আকর্ষণ তৈরি করতে হবে। এর পাশাপাশি, শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার করে সেটিকে বিজ্ঞানসম্মত এবং যুক্তিনিষ্ঠ করতে হবে।"


সম্মেলনের গুরুত্ব:


সত্যজিৎ চক্রবর্তী তাঁর বক্তব্য শেষ করেন এই আহ্বানের মাধ্যমে, “বিজ্ঞান আন্দোলনের মাধ্যমে সমাজকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সুফল সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার যে দায়িত্ব আমরা নিয়েছি, তা আরও জোরালোভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। বিজ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত এক যুক্তিবাদী সমাজ গঠনে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”


Top Post Ad

Below Post Ad

Hollywood Movies