মাদুরাই,: দেশজুড়ে নয়া উদারনীতির আগ্রাসন এবং সাম্প্রদায়িক ও ফ্যাসিবাদী শক্তির উত্থানের কঠিন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় আগামী দিনের সংগ্রামের রণকৌশল নির্ধারণ করতে চলেছে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) বা সিপিআই(এম)-এর আসন্ন ২৪তম পার্টি কংগ্রেস। পার্টির শীর্ষ নেতৃত্ব এবং সারা দেশ থেকে আগত প্রতিনিধিরা এই ঐতিহাসিক অধিবেশনে মিলিত হয়ে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির চুলচেরা বিশ্লেষণ এবং ভবিষ্যৎ কর্মসূচী চূড়ান্ত করবেন।
পার্টি সূত্রে খবর, এই কংগ্রেসের মূল আলোচ্যসূচির কেন্দ্রে থাকবে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের জনবিরোধী নীতি, কর্পোরেট স্বার্থে দেশের সম্পদ লুন্ঠন, ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব, আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি এবং কৃষক ও শ্রমিক স্বার্থের উপর লাগাতার আক্রমণের মতো বিষয়গুলি। পাশাপাশি, দেশের ধর্মনিরপেক্ষ কাঠামোর উপর পরিকল্পিত আঘাত, সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন, ভিন্নমত দমনের প্রচেষ্টা এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে দুর্বল করার মতো ফ্যাসিবাদী প্রবণতার বিরুদ্ধে কীভাবে আরও শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলা যায়, সেই বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে।
গত পার্টি কংগ্রেসের পর থেকে দেশ ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন, পার্টির সাফল্য ও ব্যর্থতাগুলির পর্যালোচনা করা হবে এই অধিবেশনে। সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি, পার্টির মতাদর্শগত দৃঢ়তা বজায় রাখা এবং তরুণ প্রজন্মকে পার্টির পতাকাতলে সামিল করার উপর বিশেষ জোর দেওয়া হবে।
সিপিআই(এম) মনে করে, বর্তমান পরিস্থিতিতে কেবলমাত্র বামপন্থী দলগুলির ঐক্যই যথেষ্ট নয়, সমস্ত গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে এক ছাতার তলায় এনে বিজেপি এবং তার সহযোগী শক্তিগুলির বিরুদ্ধে একটি বৃহত্তর বিকল্প গড়ে তোলা অপরিহার্য। এই পার্টি কংগ্রেস সেই বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পার্টির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট এবং অন্যান্য শীর্ষ নেতৃবৃন্দ মনে করেন, এই ২৪তম পার্টি কংগ্রেস শুধুমাত্র সিপিআই(এম)-এর জন্য নয়, দেশের সমস্ত বামপন্থী, প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এখান থেকেই আগামী দিনে দেশব্যাপী আন্দোলন ও গণসংগ্রামের রূপরেখা তৈরি হবে, যা শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র, যুব, মহিলা সহ সমস্ত শ্রমজীবী ও শোষিত মানুষের স্বার্থ রক্ষা করবে এবং সাম্প্রদায়িক ও ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে decisive লড়াইয়ের পথ প্রশস্ত করবে।
কংগ্রেস থেকে গৃহীত রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক সিদ্ধান্তগুলি পার্টির লক্ষ লক্ষ কর্মী ও সমর্থকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে এবং তার ভিত্তিতেই দেশজুড়ে নয়া উদ্যমে লড়াইয়ের প্রস্তুতি শুরু হবে বলে পার্টি নেতৃত্ব আশাবাদী।