আগ্রায় ক্ষত্রিয় গৌরক্ষা দলের হামলা: মুসলিম যুবকের হত্যা
আগরা, ২৫ এপ্রিল ২০২৫: পাকিস্তানের মদতে পরিচালিত সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর বর্বর আক্রমণের বিরুদ্ধে যখন দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঢেউ উঠেছে, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সবাই একযোগে এই হিংসার নিন্দা জানাচ্ছে, ঠিক তখনই একটি অজানা হিন্দু সংগঠন সন্ত্রাসীদের উদ্দেশ্যকে সফল করার পথে নেমে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পাহেলগাঁওতে যেভাবে সন্ত্রাসীরা ধর্মীয় পরিচয় জেনে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ২৬ জনকে হত্যা করেছিল, ঠিক একইভাবে আগরায় এক মুসলিম যুবককে লক্ষ্য করে হত্যা করা হয়েছে।
आगरा में 27 साल के गुलफाम से पहले आतंकवादी मनोज कुमार राणा ने नाम पूछा गया फिर उसकी गोली मारकर हत्या कर दी।
— Kavish Aziz (@azizkavish) April 24, 2025
गोली लगते ही गुलफाम सड़क पर लहूलुहान होकर गिर पड़ा। उसका साथी सैफ उसे बचाने दौड़ा तो हमलावरों ने उस पर भी फायरिंग कर दी और तमंचा लहराते हुए निकल गए
हत्या की जिम्मेदारी… pic.twitter.com/3una5hw8Uf
গত ২৪ এপ্রিল, আগরার শিল্পগ্রাম রোডের কাছে তাজগঞ্জ থানা এলাকায় একটি রেস্তোরাঁর বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন ২৭ বছর বয়সী গুলফাম। রাতের দিকে রেস্তোরাঁ বন্ধের প্রস্তুতি চলছিল, তখনই তিন যুবক একটি স্কুটারে করে এসে গুলফামের নাম জিজ্ঞাসা করে। তার ধর্মীয় পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর মনোজ কুমার রানা নামে এক ব্যক্তি তাকে গুলি করে হত্যা করে। গুলফাম রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় লুটিয়ে পড়লে তার বন্ধু সাইফ তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে। কিন্তু হামলাকারীরা সাইফের দিকেও গুলি চালায়, যদিও সে বেঁচে গিয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে একটি সংগঠন, যারা নিজেদের ‘ক্ষত্রিয় গৌরক্ষা দল’ বলে পরিচয় দিয়েছে। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি নিজেকে এই দলের সদস্য হিসেবে দাবি করে বলছে, “গো রক্ষা দল আগরা ইউপি, টিম মনোজ চৌধুরী, রাণা গো রক্ষা দল।” তারা দাবি করেছে, পাহেলগাঁও হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর প্রতিশোধ হিসেবে তারা ২৬০০ মুসলিমকে হত্যা করবে। তবে আগরা পুলিশ জানিয়েছে, ‘ক্ষত্রিয় গৌরক্ষা দল’ নামে কোনো সংগঠন আগরায় নিবন্ধিত নয়, যা এই ঘটনার তদন্তে জটিলতা সৃষ্টি করছে।
রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, এই ঘটনা পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর উদ্দেশ্যকে সফল করার একটি প্রচেষ্টা। পাহেলগাঁও হামলার পর দেশে যে ধর্মীয় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, তাকে আরও উসকে দেওয়ার জন্যই এই ধরনের ঘটনা ঘটানো হচ্ছে বলে তারা মনে করেন। একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, “এই ধরনের হত্যাকাণ্ড দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি ও ঐক্যকে ভেঙে দেওয়ার একটি ষড়যন্ত্র। এর পিছনে যারা আছে, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা উচিত।”
সামাজিক মাধ্যমে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করা হচ্ছে। সাবা খান নামে একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “পাকিস্তানের পোষা সন্ত্রাসীরা পাকিস্তানে হামলা করে না, কিন্তু ভারতের পোষা সন্ত্রাসীরা ভারতেই হামলা করে। এই কাপুরুষরা যদি সাহস থাকে, পাকিস্তানের সীমানায় গিয়ে সন্ত্রাসীদের থেকে প্রতিশোধ নিক, দেশের মুসলিমদের ওপর কেন এই কাপুরুষতা?” অন্যদিকে, আরেকজন ব্যবহারকারী মনীষ কুমার বলেন, “গুলফামের হত্যা এবং ক্ষত্রিয় গৌরক্ষা দলের এই দাবি গণতন্ত্র ও মানবতার ওপর আক্রমণ। ধর্মের নামে হিংসা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। পুলিশের উচিত দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে দোষীদের শাস্তি দেওয়া।”
এই ঘটনা ভারতের ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সামাজিক শান্তির ওপর নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। সরকার ও প্রশাসনের কাছে জনগণের দাবি, এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হোক।