২৪ তম পার্টি কংগ্রেসের মঞ্চ থেকে বিদায় নিলেন কমরেড অঞ্জু কর
একটি যুগের শেষ, একটি আবেগঘন বিদায়
সাল ২০২৫। পার্টি কংগ্রেসের ২৪ তম অধিবেশনের শেষ দিনে এক আবেগঘন মুহূর্তের সাক্ষী থাকল লাল পতাকা তলে জড়ো হওয়া হাজারো কর্মী-সমর্থক। অনেকেই কংগ্রেসের মঞ্চ থেকে বিদায় নিলেন, তবে সেই ‘অনেক’-এর মাঝেও এক ‘একজন’ ছিলেন — যাঁর বিদায় এক নিঃশব্দ বজ্রপাতের মতো। তিনি কমরেড অঞ্জু কর। কালনা মহকুমার প্রতিটা এরিয়া কমিটি, প্রতিটা বুথ, প্রতিটা কর্মী-সমর্থকের কাছে এক পরিচিত, আপন, নির্ভরযোগ্য নাম।
কমরেড অঞ্জু কর শুধু একজন রাজনীতিক নন, তিনি ছিলেন এক পথপ্রদর্শক। ১৯৮২ সাল থেকে ২০০১ পর্যন্ত টানা পাঁচবার বিধায়ক হিসেবে কালনার মানুষ তাঁকে নির্বাচিত করেছেন। শুধু নির্বাচিত করেননি, তাঁকে বিশ্বাস করেছেন, ভালোবেসেছেন, লড়াইয়ের সাথী হিসেবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে কৃষক আন্দোলন, শ্রমিক অধিকার, নারী সুরক্ষা—সব ক্ষেত্রেই কালনা মহকুমা ছিল দৃঢ় এক লাল দুর্গ।
পার্টি কংগ্রেসের মঞ্চে যখন ঘোষণা হল, “কমরেড অঞ্জু কর আজ পার্টির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিচ্ছেন”—তখন হাজারো চোখে জল, মঞ্চে নিস্তব্ধতা, আর হৃদয়ে একটাই অনুভব: "একটা যুগের অবসান হলো।"
পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দাঁড়িয়ে সম্মান জানালেন। দীর্ঘ অভিনন্দনধ্বনি, লাল সালামের জোয়ারে মিশে গেল তাঁর কর্মজীবনের প্রতিটি ধূলিকণা। সারা জীবন যিনি পার্টিকে পরিবার মনে করে কাজ করেছেন, তাঁর এই বিদায় ছিল না কোনো আড়ম্বরপূর্ণ সমাপ্তি, বরং ছিল এক দৃঢ় প্রতিজ্ঞার পাসিং দ্য বাটন—নতুন প্রজন্মকে।
কমরেড অঞ্জু কর বললেন, “আমি সরে যাচ্ছি, কিন্তু থেমে যাচ্ছি না। যতদিন শ্বাস আছে, পার্টির লড়াইয়ে পাশে থাকব।”
আজকাল রাজনীতিতে আদর্শ কমে যাচ্ছে, এমন কথার ভিড়ে কমরেড অঞ্জু কর যেন এক উজ্জ্বল ব্যতিক্রম। তাঁর নিঃশর্ত নিষ্ঠা, জনসম্পৃক্ততা আর লড়াকু মানসিকতা বহু তরুণের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
বিদায় কমরেড,
তোমার লড়াই চলবে আমাদের হাতে।
তোমার স্বপ্ন বয়ে নিয়ে যাবে নতুন প্রজন্ম।
লাল সালাম।