ঠাকুরপুকুরে গাড়ি চাপা পড়ে মৃত্যু: কমরেড আমিনুর রহমানের পরিবারের পাশে সিপিআইএম নেতৃত্ব, দোষীদের শাস্তির দাবি
ঠাকুরপুকুরে গাড়ি চাপায় নিহত কমরেড আমিনুর রহমানের পরিবারের সাথে দেখা করলেন সিপিআইএম নেতৃত্ব। রবিবার, ৬ এপ্রিল, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঠাকুরপুকুর বাজার সংলগ্ন ডিএইচ রোডে ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন সুদীপ সেনগুপ্ত, শতরূপ ঘোষ, কৌস্তভ চ্যাটার্জি, নিহার ভক্ত, রতন ভাদুড়ী, এবং শেখ রোহন। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, প্রভাবশালী অপরাধীদের আড়াল করতে পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে নিষ্ক্রিয় থেকেছে।
দুর্ঘটনার মূল অভিযুক্ত, ছোটপর্দার পরিচালক সিদ্ধান্ত দাস ওরফে ভিক্টো, মদ্যপ অবস্থায় নো এন্ট্রি ভেঙে গাড়ি চালিয়ে একাধিক পথচারীকে ধাক্কা দেন। এ ঘটনায় কমরেড আমিনুর রহমান ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান, এবং আরও একজন গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন।
পরিবারের অভিযোগ: এটা ইচ্ছাকৃত খুন
নিহতের পরিবারের দাবি, ঘটনাটি মোটেই অনিচ্ছাকৃত নয়। গাড়িটি দুর্ঘটনার আগে থেমেছিল, পরে আচমকা গতি বাড়িয়ে আমিনুর রহমানকে ধাক্কা মারে। এমনকি দুর্ঘটনার পর গাড়িতে থাকা মদের বোতল ও গাঁজার কোলকের বিষয়টি এফআইআরে উল্লেখ করা হয়নি।
পরিবার আরও অভিযোগ করেছে, পুলিশ তাদের কোনও সাহায্য করেনি। অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা পর্যন্ত করা হয়নি। এমনকি, পুলিশ পরে রাতের বেলায় পরিবারকে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ‘সেটেলমেন্ট’ করার প্রস্তাব দেয়।
নেতৃত্বের দাবি: দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে
সিপিআইএম নেতারা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন। তারা বলেন, “একজন কমরেডকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। সেলেব্রিটি বলে কাউকে রেহাই দেওয়া যাবে না। আইনের উর্দ্ধে কেউ নয়।”
পরিকল্পিত ধামাচাপার অভিযোগ
পরিবার এবং পার্টির দাবি, প্রভাবশালী পরিচালকের নামে দায়ের হওয়া মামলায় ‘অনিচ্ছাকৃত খুন’ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে, যাতে জামিন পাওয়া সহজ হয়। আমিনুর রহমানের ছেলে প্রশ্ন তুলেছেন, “যদি গাড়ির ব্রেক ফেল করে, তবে সিসিটিভি ফুটেজে তা কেন দেখা যাচ্ছে না? আমাদের প্রশ্ন, তদন্তে এই বিষয়গুলো উপেক্ষা করা হচ্ছে কেন?”
দাবি: স্বচ্ছ তদন্ত ও কঠোর শাস্তি
পরিবার এবং সিপিআইএম নেতারা ঘটনাটির সঠিক তদন্ত এবং অভিযুক্ত সিদ্ধান্ত দাস ও তার সহযোগীদের কড়া শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন। তাঁদের দাবি, এফআইআরের বিষয়বস্তু পরিবর্তন করে দোষীদের আড়াল করার চেষ্টা চলছে।
ঘটনার পর থেকে এলাকাজুড়ে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় মানুষ এবং কমরেডদের দাবি, বিচার না হওয়া পর্যন্ত প্রতিবাদ চলবে।