নাইজারে ঝাড়খণ্ডের ৫ শ্রমিকের অপহরণ, মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের কেন্দ্রের কাছে সাহায্যের আবেদন
রাঁচি, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ (সংবাদ প্রতিদিন): পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারে ঝাড়খণ্ডের গিরিডিহ জেলার ৫ জন শ্রমিকের অপহরণের ঘটনায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে। এই শ্রমিকরা কালপাতারু পাওয়ার ট্রান্সমিশন লিমিটেড কোম্পানিতে কাজ করতে ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে নাইজারে গিয়েছিলেন। গত শুক্রবার বিকেলে এই অপহরণের ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। এই ঘটনার পর থেকে শ্রমিকদের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে, এবং তাদের পরিবার উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে।
অপহৃত শ্রমিকদের নাম সঞ্জয় মাহাতো, ফালজিৎ মাহাতো, রাজু মাহাতো, চন্দ্রিকা মাহাতো এবং উত্তম মাহাতো। সঞ্জয়, ফালজিৎ, রাজু ও চন্দ্রিকা গিরিডিহ জেলার বাগোদার থানার অন্তর্গত দোন্দলো পঞ্চায়েতের বাসিন্দা, আর উত্তম মাহাতো মুন্দ্রো পঞ্চায়েতের বাসিন্দা। ফালজিৎ মাহাতোর ভাই দামোদর মাহাতো জানিয়েছেন, "শুক্রবার সকাল ১০টায় ফালজিৎ আমার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিল। তারপর কিছু বাইক আরোহী অপরাধী এসে তাদের নিয়ে চলে যায়। এরপর থেকে তাদের ফোন বন্ধ। আমরা সরকারের কাছে তাদের খুঁজে বের করার এবং নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আবেদন জানাচ্ছি।"
এই ঘটনায় ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন রবিবার (২৭ এপ্রিল) কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন। তিনি এক্স প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, "মাননীয় কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর জিকে অনুরোধ করছি, দয়া করে আমাদের ঝাড়খণ্ডের প্রবাসী ভাইদের সাহায্য করুন, যাদের নাইজারে অপহরণ করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।" শ্রমিকদের পরিবারও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়েছে।
নাইজারে সাম্প্রতিক সময়ে সেনাবাহিনী এবং জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির মধ্যে সংঘর্ষ বেড়েছে। গত শুক্রবার নাইজারের পশ্চিমাঞ্চলে একটি হামলায় ১২ জন সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। এই এলাকা মালি ও বুরকিনা ফাসোর সীমান্তের কাছে অবস্থিত এবং দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গি হামলার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। গত মাসে একটি জিহাদি গোষ্ঠী এই অঞ্চলে একটি গ্রামে হামলা করে ৪৪ জন নাগরিককে হত্যা করেছিল। এই পরিস্থিতিতে নাইজারে কাজ করা বিদেশি শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সমাজকর্মী শিকান্দর আলি, যিনি প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য কাজ করেন, জানিয়েছেন যে এই শ্রমিকরা কালপাতারু পাওয়ার ট্রান্সমিশন লিমিটেড কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। তিনি বলেন, "এই ঘটনা খুবই দুঃখজনক। আমরা আশা করছি কেন্দ্রীয় সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।"
এখন দেখার বিষয়, ভারত সরকার এই ঘটনায় কী পদক্ষেপ নেয় এবং ঝাড়খণ্ডের এই শ্রমিকদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনতে কী ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন বিদেশ মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের আশা প্রকাশ করেছেন।